নিজস্ব প্রতিবেদক: নৌযানের মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ (চালকদের যোগ্যতা নির্ধারণী) পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও দুর্নীতি বন্ধ এবং শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও মাসিক খাদ্যভাতা প্রদানসহ ১১ দফা দাবিতে ২০ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
সংগঠনের দায়িত্বশীল সূত্র শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া ১৫ দফা দাবিতে সারা দেশে লাগাতার ধর্মঘটে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌ শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদ। তাদের ১৫ দফার মধ্যেও মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও দুর্নীতি বন্ধ এবং শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও খাদ্যভাতাসহ ফেডারেশনের অধিকাংশ দাবি রয়েছে।
১৯ অক্টোবর রাতের প্রথম প্রহর (১৮ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট) থেকে তাদের ধর্মঘট শুরু হবে। ১২ অক্টোবর সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে ঐক্য পরিষদ নেতারা জানিয়েছেন।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নিয়োগপত্র প্রদান, ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে প্রফিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন, খাদ্যভাতা প্রদান এবং নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের পরীক্ষায় অনিয়ম বন্ধ হয়রানি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সাল থেকে তারা আন্দোলন করে আসছেন। এগুলোর কয়েকটি পূরণ হলেও অমীমাংসিত ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ২০১৮ সালে আবারো শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন ফেডারেশন নেতারা; যার অনুলিপি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, নৌযান মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে দেওয়া হয়।
সূত্র মতে, এরপর একই বিষয়ে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রম ও কর্মসংস্থান অধিদপ্তর থেকে সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম লাগাতার ধর্মঘট আহ্বানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা চাই, নৌ সেক্টরের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা। কিন্তু শ্রমিকদের পেটে খিদে থাকলে এবং প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলে।
এই নৌযান শ্রমিক নেতা আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি দাবি যৌক্তিক। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নৌ শ্রমিকদের জন্য কন্ট্রিবিউটরি প্রফিডেন্ট ফান্ড ও ফিশারীসহ অন্যান্য বেসরকারি খাতের নৌ শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন, মাসিক খাদ্যভাতা প্রদান, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের বিভিন্ন পরীক্ষায় অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ- এসব দাবি পূরণ না হলে নৌ সেক্টর কখনও স্থিতিশীল হবে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগসহ কয়েকটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘নৌ শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ১৫ দফা দাবিতে লাগাতার ধর্মঘট ডাকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যেও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের উপরোক্ত প্রধান দাবিগুলো রয়েছে; যেমন নিয়োগপত্র ও খাদ্যভাতা প্রদান, সার্ভিস বুক, কল্যাণ তহবিল গঠন, মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় অনিয়ম বন্ধ ইত্যাদি।
ঐক্য পরিষদের এ বিষয়ক দাবিতে বলা হয়েছে- মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সকল প্রকার দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy