ফের স্লোগানে মুখর ঢাকার রাজপথ। তবে এবার সংস্কার নয়, দাবি উঠেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিলের। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা বের হয়। পদযাত্রাটি হাইকোর্ট মোড় হয়ে মৎস্য ভবন মোড় অতিক্রম করে পৌঁছায় পরীবাগ মোড়ে। সেখানে আগে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে রাখে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। পুলিশি বাধায় পদযাত্রা থমকে যায়।
এসময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অতীতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ চরাও হলেও আজ ধৈর্যধারণ করেছে। আমরা আজ তাদের অনুরোধ রেখে ফিরে যাচ্ছি। তবে আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে যদি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করা হয় তবে সেদিন কোন অনুরোধ রক্ষা করা হবে না। আমরা আশা করব সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করবে।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত নাগরিক সমাবেশ। সমাবেশে বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দলের নেতা, বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা অচিরেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান।
পরিবেশ আইনবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের তার বক্তব্যে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। স্বাধীনতা সমন্নুত রাখতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল দাবি জানান তিনি। বলেন, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোর সমাধান করা যেতে পারে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষের বাকস্বাধীনতা রক্ষা ও অধিকার আদায়ে যতো বাধাই আসুক গুড়িয়ে দেয়া হবে। এসময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনগুলোকে পুলিশের হামলা মামলার কঠোর সমালোচনা করেন।
কারাবন্দি কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোর কবিরের জামিনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দি বাকিদেরও মুক্তির দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশ থেকে কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচারেরও দাবি জানানো হয়।
পদযাত্রায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড মহাসচিব কাউন্সিলের নঈম জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা চৌধুরী, বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমগীতের সংগঠক বীথি ঘোষ, লেখক ও প্রাবন্ধিক অরূপ রায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে থাকা রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল আলম ভূঁইয়া, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক কর্মী প্রমুখ। উপস্থিত না থাকলেও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সংহতি প্রকাশ করেছেন।