ডেস্ক:মা ও মেয়েকে রশিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর ‘গরু চুরির মামলায়’ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘গরু চোর’ আখ্যা দিয়ে মা-মেয়েকে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে কোমরে রশি বেঁধে মা-মেয়েকে প্রকাশ্য সড়কে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। সেখানে চেয়ারম্যান নিজেও তাদের আবার প্রহার করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুলিশকে খবর দিয়ে বিপদাপন্ন মা-মেয়ে ও ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পুলিশ তাদের চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেন।
গত শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের সীমান্ত চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ছবি প্রকাশের পর শনিবার রাতে বিষয়টি ভাইরাল হয়। নিন্দার ঝড় উঠে সবখানে।
এর আগে শুক্রবার রাতেই মাহবুবুল হক নামের একজন বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি গরু চুরির মামলা করেন (নম্বর-২১, তাং-২১ আগস্ট ২০২০)।
এ মামলায় চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে শনিবার বিকেলেই তাদের কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের কাছ থেকে মানুষ অজ্ঞান করার স্প্রে ও একটি ছুরি উদ্ধারের কথাও মামলায় লেখা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন চুরির মামলায় মা-মেয়ে ও ছেলেসহ চারজন কারাগারে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে আনা হয়েছে।
তারা হলেন- পটিয়ার শান্তিরহাট কুসুমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল কালামের স্ত্রী পারভিন আক্তার (৫৫), তার দুই মেয়ে সেলিনা আক্তার সেলী (২৫), রোজিনা আক্তার (২০) ও ছেলে এমরান (২৩)।
তাদের চেয়ারম্যানের কবল থেকে নিয়ে যাওয়া চকরিয়া থানার হারবাং তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমরা ফোর্স পাঠাই। আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তির দায়ের করা গরু চুরির মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে মা-মেয়েসহ চারজনের বাড়ি পটিয়ার শান্তির হাটে। অন্যজনের বাড়ি পেকুয়া লালব্রিজ এলাকায়।