ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ভগ্নিপতির থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতেই ১০ বছরেরমেহেদী হাসান কামরুল ও তার ১৪ বছরের বোন শিফা আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করে মামা বাদল মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর ভাই-বোন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে এ তথ্য বের হয়ে এসেছে। ভাগ্নে-ভাগ্নিকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বাদল।
বাদল কুমিল্লার হোমনা উপজেলার খোদে-দাউদপুর গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকা থেকে বাদলকে আটক করে পুলিশ।
বুধবার রাতে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বাহরাইন প্রবাসী বাদল গত মার্চ মাসে দেশে ফিরে আসেন। গ্রামে গোষ্ঠীগত দাঙ্গার একটি মামলায় আসামি হওয়ার কারণে বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউপির সাহেবনগর গ্রামে তার বোন হাসিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। প্রবাসে থাকার সময় দোকান করার জন্য ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন বাদল। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য কামালের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার। এর জেরে সপ্তাহখানেক আগে বাদলকে থাপ্পড় মারেন কামাল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করেন বাদল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে কামালের ছেলে কামরুল তার মামা বাদলের রুমে যায়। বাদল তখন রুমে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিশোধের নেশায় কামরুলের হাত-পা বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করে বাদল। পরে মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। ভাগ্নি শিফা রুম ঝাড়ু দিতে গিয়ে দেখে ফেললে তাকেও মারার জন্য ধ্বস্তাধস্তি করে বাদল। একপর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা মেরে বাথরুমে নিয়ে তাকেও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ অন্য একটি রুমের খাটের নিচে রেখে দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরো জানিয়েছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মাগরিবের আজান হওয়ার পরও কামরুলকে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি করার জন্য বাইরে বের হয়। কিছুক্ষণ পর শিফাকেও দেখতে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরই মধ্যে বাদলকে সঙ্গে নিয়ে বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট এলাকায় কামরুল ও শিফাকে খুঁজতে যান কামাল। কিন্তু কামালকে না বলেই বাদল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বুধবার নিহতদের বাবা কামাল বাদী হয়ে বাদলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাজু আহমেদ জানান, মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।