তৌহিদ আহমেদ রেজা: সারা দেশে আলোচিত পর্দা কেলেংকারীর ঘটনায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের সাবেক দুই প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আ.স.ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও ডা. গণপতি বিশ্বাসকে চাকরি হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে উপস্থাপিত এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। সুতরাং মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদনের মাধ্যমে উল্লিখিত দুই কর্মকর্তা চাকরি হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হিসেবে পরিগনিত হয়েছেন।
এর আগে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এক পর্দার দাম ৩৭ লাখ শিরোনামে গতবছর সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। এরপর পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনায় ১০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদক গতবছর ২৭ নভেম্বর মামলা করে।
উল্লেখ্য, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা এবং আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় গত ২০ আগস্ট হাইকোর্ট দুদককে এ বিষয়ে তদন্ত করে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার ১৬৬টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে।
অনিক ট্রেডার্স ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিল পেলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ কোটি টাকা যন্ত্রপাতির দাম বেশি দেখানোসহ বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে বিল আটকে দেয়। এ কারণে ২০১৭ সালের ১ জুন বকেয়া আদায়ে হাইকোর্টে একটি রিট করে অনিক ট্রেডার্স।
রিটের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অনিক ট্রেডার্সের সরবরাহ করা ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির একটি তালিকা চেয়ে পাঠান। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই ১০ কোটি টাকার বিপরীতে দামসহ ১০ আইটেমের যন্ত্রপাতির একটি তালিকা দেন।
এদিকে ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মোট পাঁচজন চিকিৎসক প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারা হলেন- আস ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এবিএম শামসুল আলম, মো. ওমর ফারুক খান, গণপতি বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে ওমর ফারুক খান মারা গেছেন।