ডেস্ক: রাজধানী এবং এর আশপাশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। বস্তি থেকে শুরু করে আবাসিক এলাকায় লাইনম্যানরা নিয়ন্ত্রণ করছে এসব অবৈধ সংযোগ। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, দেরি হয়ে গেছে অনেকটা। এখনই লাগাম না টানলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
নিজ দায়িত্বেই বাসায় গ্যাসের লাইন নিচ্ছেন এক ব্যক্তি। অনুমতির তোয়াক্কা নেই, নেই নিষেধের বালাই। পরিচয় দিলেন নিজেকে তিতাসের কর্মচারী হিসেবে। বলছি কড়াইল বস্তির অন্দরের কথা। এই এক বস্তিরই প্রায় ১ লাখ মানুষ বছরের পর বছর ব্যবহার করছেন অবৈধ গ্যাস।
অনুসন্ধান বলছে, কড়াইল বস্তির বউ বাজার এলাকার গ্যাসের সরবরাহ লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন মোমিন। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের নেতা বনে যান মোমিন। বর্তমানে তাঁতী লীগের বনানী থানার নামধারী এই সহ সভাপতিকে তার বস্তির চেম্বারে পাওয়া যায়নি।
শুধু বস্তি নয় সব শ্রেণীর আবাসিক এলাকাতেও ছড়িয়ে গেছে অবৈধ সংযোগ। অনেকটা জেনেবুঝেই মানুষ তার ঘরে ডেকে আনছে ঝুঁকি। আশুলিয়ার এমনই এক এলাকার নাম জহরচন্দ্রা। অনেক সময় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নে চলে উচ্ছেদও।
তাহলে সমস্যা কোথায়? সর্ষের ভেতরেই কি ভূত রয়েছে ? লাইন নিতে হাজার হাজার টাকাও দিয়েছিলেন এলাকাবাসী।
যে এলাকাটিতে অনুসন্ধান সেখানে অনেক মানুষের বসতি। সেখানে সবাই অবৈধ লাইন ব্যবহার করতেন। অভিযানের খবর পেয়ে তারা গ্যাসের চুলা খুলে রেখে খড়ির চুলায় রান্না করা শুরু করেন।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল মামুন বলেন, ‘যেগুলো নলেজে আছে সেগুলো আমরা দ্রুত উচ্ছেদের চেষ্টা করছি।’নগর পরিকল্পনাবিদদের আশঙ্কা, জালের মতো ছড়ানো অবৈধ গ্যাস সংযোগে পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। এ অবস্থার মধ্যে যদি বড় ধরণের ভূমিকম্প হয় তবে পরিস্থিতি কি হবে তা অকল্পনীয়।
নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘পুরো নগরী জুড়ে টাইমবোমার মতো ছড়িয়ে আছে গ্যাস লাইনগুলো। গ্যাস কর্তৃপক্ষের চরিত্র হচ্ছে একবার যদি লাইন দেয় তারপরে সব চলে যায় লাইনম্যানের কর্তৃত্বে।
তিতাসেরই হিসাব বলছে, ঢাকাসহ আশেপাশের ৪ জেলায় অবৈধ সরবরাহ লাইন রয়েছে প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার।
অবৈধ সংযোগ উচ্ছেদে লোক দেখানো অভিযান চলে কিন্তু আড়ালে থেকে যায় অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। যে কারণে কদিন পর একই এলাকায় আবারও চালু হয় অবৈধ সংযোগ। সরকার হারায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।