জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এর নীল দলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিশিলি ও বিব্রত করার অভিযোগ উঠেছে। উক্ত শিক্ষক হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামসুল কবির।
জানা যায়, একটি অডিও বার্তায় জনৈক সাংবাদিককে শামসুল কবির বলেন, ‘তোমাদের তো তিন চার গ্রুপ করে দিছে ভিসি স্যারের চামচামি করার জন্য। ভিসি স্যারের চামচামি করলে তো তোমাদেরকে কেউ ডাকবে না। মাঝে মাঝে এমন নিউজ করবা যাতে বাপ ডাকতে হয়। তিনি নিজেকে সহকারী প্রক্টর (যদিও নন) হিসেবে পরিচয় দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে (উপাচার্য) ইঙ্গিত করে চাপাবাজ বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সিন্ডিকেটে অধ্যাপক গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ এর পদোন্নতির ক্ষেত্রে দুই নম্বরি হইছে (দূর্নীতি হয়েছে) তা যেনো নিউজ করা হয়।
এই অডিও ফাঁসের পর গত ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের কার্যকরি সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে নীলদল এবং তারা ড. শামসুল বীরেরর এমন অডিও ফাঁসের ব্যাপারে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েল নীলদল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য কতৃক বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্তিতিশীল ও বিব্রত করার চেষ্টাকে নিন্দা জানায়। তারা আরো বলেন, ড. শামসুল কবীরের বক্তব্য রুচিহীন, অশোভন ও প্রগতিশীল বিরোধী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঠিক কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টাকে নিন্দা জানান তারা।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ড. শামসুল কবীর জানান, তিনি নীলদলের আদর্শ বহির্ভূত নানা রকম কাজ দেখে বিব্রত হয়েছেন। বারবার বলার পরও সেসব সংশোধন না হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। অডিও বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনও জানি না, কোন অডিও এর কথা বলা হচ্ছে। তাছাড়া আমি এখনও নীলদলের সাধারন সদস্য। আমি এমন কোন কিছু করে থাকলে আমাকে ডাকলে বুঝতে পারব।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নীল দলের সাধারণ সম্পাদক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, তিনি গত মার্চ মাসে পদত্যাগ করেছেন তবে করোনায় সব কিছু বন্ধ থাকায় তা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তাই গতকাল মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া তার অডিও বার্তাটির আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নীলদলের সভাপতি ড.জাকারিয়া মিয়া বলেন, আসলে আদর্শিক কোন দ্বন্দ্ব নেই বরং দ্বন্দ্ব হলো স্বার্থের। বেশ কয়েকটি বিষয়ে তাকে সুবিধা না দেয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বেশ কিছুৃ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন। তিনি আরো বলেন, শামসুল কবীর বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল ও বিব্রত করতে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, আমি মৌখিক ভাবে কিছু শুনেছি। যদি শাস্তিযোগ্য কিছু করে থাকে তবে বিধি অনুসারে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়টি আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষকদেরও বিষয়। তারা যদি মনে করে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে তবে তারাও কিছু করতে পারে। আমি বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
উল্লেখ্য, এরআগেও ড. শামসুল কবীরকে নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শহীদ মিনারে হাসির ছবি ভাইরাল, ছাত্রকে দিয়ে থিসিস লিখিয়ে নেওয়া ও নিয়মভঙ্গ করে পিএইচডি লাভ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সহকর্মীর বসার রুম দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম উপেক্ষা করে রাজনীতির সাথে যুক্ত তিনি। ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চান তিনি। এছাড়াও লক্ষীপুর জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..