1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
রংপুরে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর দুই বোনের হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন এক নারী। চোর সদস্যকে পুলিশে দেয়ায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মাধবপুর ইউপি সদস্যের বাড়িতে পালতক চোরদের হামলা ও মারধর, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুরুতর আহত এক সাংবাদিক। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২৮ এপ্রিল  সাভারের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে পুরস্কার পেলেন ৬৮জন শিশু-কিশোর দিলেন খোরশেদ আলম! সাভারে ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে পাওয়া অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মেয়র পদপ্রার্থী খোরশেদ  লোহাগাড়ায় “বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস” উপলক্ষে চিকিৎসক সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

রংপুরে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর দুই বোনের হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০.৪৫ পিএম
  • ২৭৪ বার পঠিত

রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১৮/০৯/২০২০খ্রিঃ তারিখ দুপুর অনুমান ১৪.০০ ঘটিকার সময় জানা যায় যে, কোতয়ালী থানা, আরপিএমপি, রংপুরের মধ্য গণেশপুর এলাকার সুমাইয়া আক্তার মিম(১৭), পিতা-মোঃ মোকছেদুল ইসলাম ও তার চাচাতো বোন জান্নাতুন মাওয়া(১৪), পিতা-মোঃ মমিনুল ইসলামদ্বয়কে অজ্ঞাতনামা আসামী বাদী মোঃ মমিনুল ইসলাম এর শয়ন কক্ষে হত্যা করে পালিয়ে যায়। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তীর পর আরপিএমপি, রংপুরের অপরাধ বিভাগ ও কোতয়ালী থানার তদন্ত টিম দ্রুত ক্রাইমসিনে উপস্থিত হয়ে মৃত সুমাইয়া আক্তার মিম(১৭)‘কে বাদীর উত্তর দুয়ারী পশ্চিম পাশের্^র কক্ষে এবং জান্নাতুন মাওয়া(১৪)‘কে বাদীর উত্তর দুয়ারী পূর্ব পাশের্^র কক্ষে মৃত অবস্থায় পরে থাকতে দেখা যায়। এই ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে কোতয়ালী থানার জিডি নং-১০০০, তারিখ-১৮/০৯/২০২০খ্রিঃ মূলে উক্ত ভিকটিমদ্বয়ের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত পূর্বক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল এর ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম জান্নাতুন মাওয়া(১৪) এর পিতা মোঃ মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে কোতয়ালী থানায় সূত্রোক্ত মামলাটি রুজু করেন।

মামলার রুজুর পর হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ, অপরাধের সাথে জড়িত আসামী সনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ, বিপিএম, পুলিশ কমিশনার, আরপিএমপি, রংপুর মহোদয়ের নির্দেশে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) জনাব মোঃ আবু মারুফ হোসেন মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) জনাব মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার, পিপিএম-সেবা, অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ আব্দুর রশিদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোঃ রাজিফুজ্জামান বসুনিয়া, তদন্তকারী অফিসার এস আই(নিঃ) জনাব মোঃমজনু মিয়া সহ কোতয়ালী থানার তদন্ত টিমের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাত আসামীকে সনাক্ত পূর্বক গত ১৯/০৯/২০২০খ্রিঃ তারিখ বিকাল অনুমান ১৫.১০ ঘটিকার সময় কোতয়ালী থানাধীন মধ্য বাবুখাঁ এলাকা হতে অপরাধের সাথে সরাসরি জড়িত মোঃ মাহফুজুর রহমান  (রিফাত)(১৭), পিতা-মোঃ এমাদুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ রহিমা বেগম, সাং-মধ্য বাবুখাঁ, থানা-কোতয়ালী, জেলা-রংপুরকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। হত্যার বিষয়ে তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অত্র মামলার ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার মীম (১৭) এর সাথে তার দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছরের  ধরে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও সস্প্রতি সময়ে ভিকটিম মীম এর সাথে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। গত ১৭/০৯/২০২০ খ্রিঃ ভিকটিম মীম এর সাথে তার যোগাযোগ হলে তার সাথে রাতে দেখা করতে চায়। এই সময়ে ভিকটিম মীম তার চাচাতো বোন অপর ভিকটিম জান্নাতুল মাওয়ার বাড়ীতে আসতে বলে এবং আরো বলে যে তার চা-চাচী কুড়িগ্রামে আছে। এই কথা জানার পর সে ১৭/০৯/২০২০ খ্রিঃ আছরের নামাজের পর তার বন্ধু আরিফ এর বাসা লাহেড়ীর হাটে গিয়ে তার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সে তার ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও সিম কার্ড বন্ধুর কাছে রেখে বন্ধুর মোবাইল ফোন ও অন্য আরেকটি সিম কার্ড নিয়ে এশার নামাজের পর ঐ তারিখেই বাদীর বাড়ীর কাছাকাছি গিয়ে ভিকটিম মীম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। ভিকটিম মীম এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে মীম এর সাথে দেখা করার জন্য সু-কৌশলে মীম এর চাচার বাড়ীতে প্রবেশ করে। এ সময় ভিকটিম মীমের চাচাতো বোন ভিকটিম জান্নাতুল মাওয়া অপর রুমে অবস্থান করে। অপরাধের সাথে সরাসরি জড়িত মোঃ মাহফুজুর রহমান  রিফাতের সাথে ভিকটিম মীমের দেখা হওয়ার পর তার সাথে দৈহিক মেলামেশা করে। এরপর সে মীমকে মোবাইল ফোনের ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে অন্য বন্ধুর সাথে কেন যোগাযোগ করে সেই বিষয়ে ভিকটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভিকটিম মীম এর সাথে তার মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তখন মীম বলে তুমি আমার সাথে যা করেছো আমার অপর বন্ধু তাই করেছে। এই কথা শুনা মাত্রই ভিকটিম মীমকে সু-কৌশলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা ও ধর্ষনের বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তাৎক্ষনিক ভাবে ভিকটিম মীমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রাখে এবং বিছানার উপর থাকা সিলিং ফ্যান এর দুইটি পাখা নিচের দিকে বাঁকা করে রাখে। হত্যা করার পর সে অপর ভিকটিম মাওয়ার রুম দিয়ে সুকৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে রুমে থাকা ভিকটিম মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে ভাইয়া তুমি এত রাতে কোথায় যাচ্ছো এবং মীম আপা কোথায়। ভিকটিম জান্নাতুল মাওয়া তার আপা মীমকে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে মীমের রুমে ঢোকার চেষ্টা করলে সে মীম এর হত্যা ঘটনার বিষয়টি আড়াল করার জন্য ভিকটিম মাওয়াকে ঘরে ঢুকতে না দিয়ে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রুমের মেঝেতে ফেলে রাখে। ভিকটিম জান্নাতুল মাওয়া হত্যার বিষয়টিও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে হত্যার পর তার গলায় আয়নার কাঁচ দিয়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে বলে জানায়। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর সে গোপনে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে নিজ বাড়ীতে না গিয়ে পুনরায় লাহিড়ীহাটে তার বন্ধু আরিফুল ইসলামের বাড়ীতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর বন্ধু আরিফের সাথে এই বিষয়ে কথাবার্তা বলে এবং সে অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি তার বন্ধুর নিকট ফেরত দেয় এবং বন্ধুর নিকটে রাখা তার মোবাইল ফোনটি ফেরত নিয়ে বন্ধুর বাড়ীতেই রাত্রীযাপন করে। পরবর্তীতে মীম ও মাওয়ার মৃত্যুর বিষয়টি জানার পর তার বন্ধু আরিফুল ইসলাম গত ১৮/০৯/২০২০ খ্রিঃ বিকালে তার নিজ বাসায় রেখে আসে। অপরাধের সাথে জড়িত মোঃ মাহফুজুর রহমান @ রিফাতকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ধরনের সীমকার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ আলামত যথাযথ নিয়মে উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে আরিফুল ইসলামকে নিকট হতে অদ্য ২০/০৯/২০২০ খ্রিঃ তারিখে বিকাল ১৫:৪৫ ঘটিকার সময় তার নিজ বাড়ী থেকে ভিকটিমের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন ও তার ব্যবহৃত মোবইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। অপরাধের সাথে জড়িত মোঃ মাহফুজুর রহমান  রিফাতকে অদ্য ২০/০৯/২০২০ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার মিম(১৭)‘কে ধর্ষন ও হত্যা এবং তার চাচাতো বোন জান্নাতুন মাওয়া(১৪)‘কে হত্যা করার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। বর্তমানে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

উপ-পুলিশ কমিশনার(অপরাধ) জনাব মোঃ আবু মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান যে, ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার মিম(১৭) তার চাচাতো বোন জান্নাতুন মাওয়া(১৪)কে অজ্ঞাতনামা আসামী হত্যা করলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এই বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি রংপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশের অপরাধ বিভাগের কোতয়ালী থানার তদন্ত টিম যৌথভাবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যা ও ধর্ষনের সাথে জড়িত মূল আসামীকে সনাক্তপূর্বক গ্রেফতার ও হত্যার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়। এর ফলে ভিকটিমের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনসাধারণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews