1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
৩০ বছর ধরে ঝুঁপড়িতে রাঁতকাটে গৌর দাসের
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৬ অপরাহ্ন

৩০ বছর ধরে ঝুঁপড়িতে রাঁতকাটে গৌর দাসের

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ২.৪২ এএম
  • ২৭৯ বার পঠিত
রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক
আসলে যার এ পৃথিবীতে কেউ নেই। দু’বেলা দুমুঠো খাবারের জন্য  ত্রিশ বছর ধরে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করে ঘুরে বেড়ান  হতদরিদ্র  এক বৃদ্ধ।ভিক্ষা করে যা আনে তা দিয়েই দুঃখে-কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে তার জীবন যাপন।
পাখির বাসার মতো একটি ঝুপড়ি  ঘর।সেটি থাকার যোগ্য নয়।শুধু নাম মাত্রই ঘর।ঘরের ভেতর রাত কাটানোর মতো নেই কোন বিছানা।ঘুমোতে হয় বাঁশের চাংড়াতে।বৃষ্টি হলে সেই ঝুপড়ি  ঘরে থাকা যায় না। ফলে ঘুমোনোর জন্য আশ্রয় নিতে হয় অন্য কারও বারান্দায়।
তিনি জীবিকার তাগিদে সারাদিন ঘুরেন অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। টিনের ঝাপড়ি  হলেও উপরের পুরোনো টিন অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে ভরা।ফলে দিনের বেলায় সূর্য শিখা এবং রাতে খোলা আকাশের তারা স্পষ্ট ভাবে চোখে পড়ে।তারপরও তার খোঁজ রাখেন না মেম্বার চেয়ারম্যান।
এমন পরিস্থিতে সরকারী ঘর পাওয়ার যোগ্য হয়ে আজও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারী ঘর।
“মোর কাও নাই, ৩০ বছর ধরি একলায় একলায় এই ধাপরিত থাকোং। ভাগিনায় থাকির জন্যে এইকন্যা করিদিছে।ভিক্ষা করি খাং। বউ ছাওয়া কাও নাই। চেয়ারম্যান একনা বয়স্ক ভাতা করিদিছে তা দিয়া চলে না। ঝড়ির দিনোত(বৃষ্টির সময়) থাকির সমস্যা হয়।সরকার কত কিছু দিয়ার নাগছে, মোক তা কই কি দেয় বাহে”।কত কষ্ট করি রাইত কাটাং।
সীমাহীন ব্যাথা আর কষ্ট ভারাক্রান্ত মনে চোখ মুছতে মুছতে কথা বলছিলেন, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের চাঁপারতল এলাকার ১নং ওয়ার্ডের ৭৩ বছর বয়সী গৌরদাস।ত্রিশ বছর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে সে। নিজের বলতে কিছুই নেই।
পলিথিন ও খড়ের বেড়া আর ফুঁটা টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস বৃদ্ধ গৌর দাসের। তিনি জীবিকার তাগিদে সারাদিন ঘুরেন অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। বার্ধক্য বয়সে হারভাঙা পরিশ্রম করে জরাজীর্ণ বসতঘরে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে তার।জনপ্রতিনিধিরা রাখেনা খোঁজ, আজও তার ভাগ্যে জোটেনি স্বপ্নের সেই ঘরটি।
ভাগিনা বিরু রায়ের দেয়া ঝুঁপড়িতে কোন রকম রাত্রি যাপন করেন তিনি।
 আরিফ উদ্দিন জুয়েল জানান,”আমার বয়সে এই ধরনের মানুষ দেখিনাই।সে আগে গ্রামে গ্রামে কাঠ খড়ি সংগ্রহ করে বিক্রি করতো।এখন আর চলার মত পথ নেই, দিন কাটে খুব কষ্টে। মেম্বার-চেয়ারম্যানেr চোখে কি পড়ে না? এই হতদরিদ্র লোকটিকে যদি কেউ সাহায্য করে তাহলে তিনি বাকি জীবনটা ভালো ভাবে নৌকাটাতে পারবে।
সহিদুল হক শাহিন নামে এক কৃষক জানান, ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি তিনি ভিক্ষা করে চলেন।স্ত্রী-সন্তান না থাকায় একাই কোনমতে দিন যাপন করেন।ভাগিনা একটু থাকার মত চালা পেতে দিয়েছে,সেখানে রাতে থাকে কোন রকম। কুকুর-বিড়াল এদিক দিয়ে ঢোকে ওদিক দিয়ে বের হয়!মানুষের বাড়িতে ঘুরে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম চলেন।এখন চোখে দেখে না, শোনেও কম।এক প্রকার শ্রাবণ প্রতিবন্ধী তিনি।
আনোয়ার হোসেন জানান,এনাক প্রতিদিন বিকেলে ভিক্ষা করতে দেখি, আমার দোকানেও যায়।আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাই এনাকে যাতে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ জানান,তিনি ঘর পাওয়ার যোগ্য। পরবর্তী তালিকায় খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাকিনা ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক বলেন,ঘরের আপাতত বরাদ্দ নেই,তিনি পাওয়ার যোগ্য। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews