1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর জোটেনি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ভাগ্যে
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে গোপনে মৃত ব্যাক্তির জমি বিক্রয়ের অভিযোগ নিয়োগে বৈধতা না থাকলেও,জাহিনুর বেগমের দাবী তিনি প্রধান শিক্ষক  তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ছাত্ররা লোহাগড়ায় দুই ভাই হত্যার ঘটনায় আসামি ২৯ কারাগারে সাভারের সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয় রাজশাহীতে সরকারি জায়গা দখল করে বিএনপি নেতাদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ নড়াইলে ডিবির অভিযানে ১০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সাভারে সান্তনা (৩৫) নামের একজন গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার শেখ হাসিনাস সহ পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে প্রসিকিউশনের চিঠি লোহাগড়ায় জয়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুমন গ্রেফতার

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর জোটেনি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ভাগ্যে

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ২.২৮ এএম
  • ২৩৫ বার পঠিত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর জোটেনি ভূমিহীন ও গৃহহীন আলেয়া বেওয়া (৫৫), আব্দুল গফুর (৮৫) ও সবুর আলী (৫০) দের ভাগ্যে। কেউ থাকেন অন্যের বাড়িতে, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ও মসজিদের পাশে ঝুপড়ি ঘরে। পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও তাদের খোঁজ কেউ রাখে না।
উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে হাতিয়ার মেলা এলাকায় বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিন গেলে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে আলেয়া বেওয়া শ্রবনপ্রতিবন্ধি ছেলেকে (১৪) নিয়ে ওই এলাকার মোজাম আলীর বাড়িতে ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। আলেয়া বেওয়ার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। দেড় বছর ধরে একটু মাথা গোজার ঠাইয়ের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে শেষ পর্যন্ত মোজাম আলীর বাড়িতে আশ্রয় হয়েছে তার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শ্রবনপ্রতিবন্ধি ছেলের ভাতার কার্ডের জন্য এলাকার মেম্বারকে ভিক্ষাবৃত্তি করে তিন হাজার টাকা দিয়েছিলাম। এরপর দুই মাস পূর্বে কার্ড হলে ভাতার প্রথম নয় হাজার টাকার মধ্যে ছয় হাজার টাকাই কেটে নেয় ওই মেম্বার। একটি ভাতা কার্ড করে দিতেই মেম্বার নয় হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, শুনেছি যার ঘর নেই, তাদের ঘর করে দিচ্ছে সরকার। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে সরকারি ঘর চাইতে গেলে তারা ৩০-৩৫ হাজার টাকা দাবী করে। এতো টাকা কোথায় পাবো। চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় ঘরও পাইনি। গরীব মানুষের আল্লাহ ছাড়া দেখার কেউ নাই।
একই এলাকার আব্দুল গফুর গস্তির এক সময় বাড়ি-ঘর-জমি-জমা সব ছিল। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন হাতিয়া ভবেশ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে। সেখানে স্ত্রী জামেনা বেগম (৭৫), দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ছেলে জাহাঙ্গীর (৪০), দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি নাতনী (১১) কে নিয়ে এক বছর থেকে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের এক কোনায় ছোট একটু জায়গায় মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছেন। এলাকার কিছু প্রভাবশালী তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে তার অভিযোগ। ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চলে আব্দুল গফুরের। বর্তমানে বয়সের ভারে ঠিকমত চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। তাই ভিক্ষাও জোটেনা কপালে। স্থানীয়রা দয়া করে কিছু দিলে তবেই খাবার জোটে তাদের।
এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, এতো কষ্ট করে থাকি তবুও কপালে সরকারি ঘর জোটেনা। বয়সের ভারে নূয়ে পড়ায় আব্দুল গফুরের প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছে যাওয়ার সামর্থ্যও নেই। তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, যার ঘর-ভাত-টাকা আছে তাদেরকেই আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেয়া হয়েছে।
ওই এলাকার অপর এক গৃহহীন সবুর আলী ওরফে চিতু পাগলা। তিনিও নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় মসজিদের পাশে ঝুপড়ি ঘরে।
এলাকাবাসী আব্দুল খালেক (৬৫), মুকুল মিয়া (৩৮), আবদুল হাকিম (৫০), লিটন মিয়া (৩০)সহ অনেকে জানান, এই তিনটি পরিবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাওয়ার যোগ্য। তারা আরও বলেন, আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করি, তা দিয়েই তাদের জীবন বাঁচে। এখান থেকে দুইশত গজের মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের দশটি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। অথচ এই পরিবারগুলোর সেখানে ঠাঁই হয়নি।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য শাহ আলম বলেন, এই তিনটি পরিবার খুবই অসহায়। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের জন্য সুপারিশ করেছিলাম, একজনও পায়নি। চেয়ারম্যানের সহযোগিতা না পাওয়ায় আমি দুস্থ্য মানুষের সহযোগিতা করতে পারছিনা। তিনি আলেয়া বেওয়ার প্রতিবন্ধি ছেলের ভাতার টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, ওই তিন পরিবারের নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে। প্রাপ্তি সাপেক্ষে তাদেরকে ঘর প্রদান করা হবে। তিনি আরও বলেন, শুধু ওই তিনটি পরিবারই নয়, এ ইউনিয়নে ওয়াবদা বাঁধ থেকে উচ্ছেদ ও নদী ভাঙ্গনে প্রায় ১২শ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তারা নানা ভাবে সরকারি খাস জায়গাসহ অন্যের বাড়িতে ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, ওই তিনটি পরিবারের আবেদন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তহশিলদারের কাছে জমা দিলে পরবর্তীতে নতুন ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাদেরকে প্রদান করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews