রিফাতুন্নবী রিফাত,গাইবান্ধাঃ
ভালো নাই গাইবান্ধার মৃৎ শিল্পের সাথে জড়িত কারিগররা।ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে নিপুণ হাতের কারুকাজের মাধ্যমে মাটি দিয়ে শিল্পীরা তৈরি করে থাকেন নানান তৈজসপত্র।তাদের জীবন-জীবিকার হাতিয়ার হচ্ছে মাটি।কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের ভালোবাসার জীবিকা বিলুপ্তি হতে চলেছে।দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে আধুনিকতার ছোঁয়ায়,চাহিদা হারাচ্ছে মাটির তৈরি শিল্পপণ্য।একসময় মাটির তৈরি তৈজসপত্রের প্রচুর চাহিদা ছিল।কিন্তু এখন মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা হারিয়ে স্থান দখল করে নিয়েছে এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি পণ্য।এসবের দাম বেশিহলেও টেকসই হওয়ায় সবাই ঝুঁকছে সেই দিকেই।আর তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছে বাপ-দাদার ধরে রাখা এই পেশা। একসময় গাইবান্ধার ৭টি উপজেলায় এ পেশার সাথে থাকা সকলের দিন কাটতো বেশ সুখে।কিন্তুু এখন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ছাড়া কারও সেভাবে এ পেশায় ভাত জুটছে না।গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের পালপাড়ায় কয়েকটি পরিবার সরাসরি মৃৎ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।এই পাড়ায় পুমার-কুমারী দিন-রাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে তৈরি করছেন বিভিন্ন মৃৎ শিল্প পণ্য।তবে সময় অনুযায়ী তারা ন্যার্য মূল্য পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কুমাররা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন,বিভিন্ন রকমের ফুলের টব,পুতুল,ল্যাট্রিনের স্লাব,কুয়ারপাত,হাড়ি,পাতিলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।সাহাপাড়া পালপাড়ার শ্রী তপন পাল জানান,তার বাবা প্রায় ৪যুগ ধরে এপেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে আর টিকে থাকতে পারছেন না। এ পেশার সাথে দীর্ঘ দিন জড়িত থাকা বিমল পাল জনান,১টলি মাটির দাম ১০০০টাকা।যা দিয়ে ১০০পাঁতিল তৈরি করা যায়।আর ১০০পাঁতিল পোড়াতে প্রায় ১২০০টাকার খড়ি লাগে।তাই বাজার-জাত মূল্যের সাথে টিকে থাকতে না পাড়ায় অনেকেই আর এ পেশায় কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না।তবে বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে অনেকেই চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।হাট-বাজারে বিক্রি করেও হয় টাকা আর হয় তা দিয়ে দ্রব্য মূল্যের উধর্বগতির এযুগে আর জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভম হচ্ছে না।প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাব রয়েছে তাদের।তাই ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরি করাতে চান।এ পেশায় তাদের সন্তানদের আগ্রহী করছে না তারা কেউ।ফলে অদূর ভবিষ্যতে এ পেশা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।