
আকাশ মার্মা মংসিং বান্দরবানঃ
অত্যন্ত সুস্বাদু ফল কাজুবাদাম চাষের জন্য আমাদের দেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলো সম্ভাবনাময় স্থান হিসাবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। বিদেশি ফল কাজুবাদাম চাষের ব্যাপারে দেশের কৃষিবিদরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
এ ব্যাপারে তারা সফলও হয়েছেন। চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলগুলোর মধ্যে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, বান্দরবান, রুমা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে অনেক বাগানের মালিক সীমিত পর্যায়ে কাজুবাদামের চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ৮০দশকের দিকে বান্দরবানে বিভিন্ন এলাকায় বান্দরবানে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কাজুবাদাম চাষের উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগ সফল হওয়ার পর অনেকেই কাজুবাদাম চাষে এগিয়ে আসে। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, রুমা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মাটি আবহাওয়া এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা কাজুবাদাম চাষের জন্য উপযুক্ত। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত কাজু বাদাম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। রুমায় উৎপাদিত কাজুবাদামগুলো বিদেশি কাজু বাদামের মতো উন্নত। তবে গত বছরে করোনার প্রাদুর্ভাব থাকার কারনে দাম কম ছিল। তবে এ বছরে কাজুবাদামের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার চাষীদের এ প্রত্যাশা। আরেকদিকে এখানে উন্নত প্রকিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা না থাকায় কাজুবাদামগুলো ক্রেতাদের সহজে আকৃষ্ট করছে না।
সূত্রে জানা যায়, বাদামের খোসা ছাড়ানোর ব্যবস্থা এখনো সেকেলে। মেশিনে বাদামের খোসা ছাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া গেলে এসব কাজুবাদামও বিদেশি কাজুবাদামের সমতুল্য হতো। এ ব্যাপারে চাষিরা উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত কাজুবাদাম ঢাকা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন ফলের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশি কাজুবাদাম প্রতি কেজি ১১শ থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হলেও আমাদের দেশে পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত কাজুবাদাম বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৬শ থেকে ৭শ টাকায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাণিজ্যিকভিত্তিতে কাজুবাদাম চাষের ব্যাপারে বিভিন্ন শিল্প উদ্যোক্তা, এনজিও, কৃষিবিভাগ এবং সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কাজুবাদাম চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকায় এবং দামি ফল হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাগানে ইতোমধ্যে ব্যাপকভিত্তিতে কাজুবাদাম চাষের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে আলাপ হয় বান্দরবানে রুমা উপজেলায় অবস্থিত বাগান মালিক উবাসিং মারমা ও মুনথাং বম’র সাথে ।
তারা বলেন, বাগানে সীমিত পর্যায়ে কাজুবাদামের চাষ করে বেশ সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। রুমা উপজেলাতে কাজুবাদাম চাষের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আমরা আমাদের বাগানে অন্যান্য ফলচাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভিত্তিতে কাজুবাদাম চাষের উদ্যোগ নিচ্ছি। আমাদের বাগানে উৎপাদিত কাজুবাদামের গুণগতমান বিদেশি কাজুবাদামের মতোই। আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকাজুড়ে কাজুবাদাম উৎপাদিত হয়ে থাকে। ভিয়েতনাম ১৯৮৮ সাল থেকে কাজুবাদাম চাষের উদ্যোগ নেয়। এ ব্যাপারে তারা বেশ সফলও হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ উদ্যোগ হাতে নিয়েছি।
সচেতন কাজুবাদাম চাষীরা আরো বলেন, কাজুবাদাম চাষের ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলে অনেক উদ্যোক্তা এগিয়ে আসবেন। দামি ফল কাজুবাদাম উৎপাদন করে দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করার উদ্যোগ নেওয়া যাবে। এতে অনেক কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply