1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
রুহিয়ার ভাষা সৈনিক ফজলুল করিমের বর্ণাঢ্য জীবন
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি প্রনয়ন,বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস চাপায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ জামিন নামঞ্জুর জেল হাজতে প্রেরন ফুলবাড়িতে যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্রবাহিনী দিবস উদযাপিত বাসে উঠাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ ছাত্রদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সাইন্সল্যাব এলাকা আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পেলেন বাহারুল আলম পুঠিয়ায় সাথী ক্লিনিককে ১০ হাজার জরিমানা, সাংবাদিকের হুমকি নড়াইলে মদ্যপানে ১স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু,আরও ১ জন হাসপাতালে ভর্তি রাজশাহীতে গোপনে মৃত ব্যাক্তির জমি বিক্রয়ের অভিযোগ

রুহিয়ার ভাষা সৈনিক ফজলুল করিমের বর্ণাঢ্য জীবন

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ৫.০৪ পিএম
  • ২৬৬ বার পঠিত

আপেল মাহমুদ, রুহিয়া(ঠাকুরগাঁও)সংবাদদাতাঃ

স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। নিজেকে তৈরি করেছিলেন সাম্যবাদী চিন্তায়। তিনি বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের মানুষকে অন্তর দিয়ে ভালোবেসে ছিলেন।

১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের কেদ্রীয় কমিটির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঠাকুরগাঁওয়ের ভাষা সৈনিক মরহুম অ্যাডভোকেট দবিরুল ইসলাম সঙ্গে তিনি কারাবন্দী হন। দিনাজপুর কারাগারে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।

তৎকালীন ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত ছাত্ররাই মূলত আন্দোলনের মূল ভূমিকা পালন করে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন চলাকালে দিনাজপুর সুরেন্দ্র নাথ কলেজের (বর্তমানে যা সরকারি কলেজ) মোজাফফর নামক জনৈক ছাত্রনেতা ঠাকুরগাঁও মহকুমায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠনের লক্ষে একদিন সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনশেড মুসলিম হোস্টেলে আসেন। সেখানে হোস্টেলের দুই নম্বর কক্ষে বসে দশম শ্রেণির ছাত্রদের নিয়ে সভা করেন। সভায় বিদ্যালয়ের সে সময়ের প্রাক্তন ছাত্র আলহাজ্ব ফজলুল করিম কে সভাপতি ও দুই নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র মনসুর আলম মজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে একুশ সদস্য বিশিষ্ট একটি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন।

এরপর থেকে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মিছিল, সমাবেশ, পিকেটিং, পোস্টারিং প্রচারের মধ্যদিয়ে জোড়দার সংগ্রাম শুরু হয়।

২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁওয়ের ছাত্ররা লাগাতার সাতদিন হরতাল পালন করে। সেই হরতালে শুধুমাত্র ডাক্তারখানা ব্যতীত সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি খাবার হোটেল পর্যন্ত বন্ধ ছিল। সেসময় মাইকের ব্যবস্থা না থাকায় হাতে লেখা পোস্টারের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রচারণা চালাতেন ছাত্ররা। সেই প্রচারণার মাধ্যমে ভাষার দাবিতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদ জানাতেন।

ফজলুল করিম ২ মার্চ ১৯২৭ সালে তৎকালীন বৃহত্তর দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহকুমার রুহিয়া ইউনিয়নের কানিকশালগাঁও গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা নইমউদ্দীন আহমদ ও মাতা সতিজান নেসা।

১৯৪৬ সালে তিনি ঠাকুরগাঁও হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ১৯৫০ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হলেও পড়ালেখা শেষ না করে ঠাকুরগাঁওয়ে ফিরে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ে তিনি গ্রেফতার হয়ে জেলে যান। ১৯৫৫ সারে মোক্তারী পাস করেন। ১৯৬২ সালের হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন ঠাকুরগাঁওয়ে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ঠাকুরগাঁওয়ে আন্দোলনের কেন্দ্র বিন্দু ছিলেন মো: ফজলুল করিম। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত অখণ্ড দিনাজপুর-৩ (বর্তমান ঠাকুরগাঁও-১) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৬ নং সেক্টরের সিভিল এ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। সেই সাথে ১৯৭১ সালের ঠাকুরগাঁও এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অখণ্ড দিনাজপুর জেলা গভর্নর নিযুক্ত হন।

সমাজ সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ঠাকুরগাঁও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রিভার ভিউ হাই স্কুল ও ঠাকুরগাঁও সরকারী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিশাল অবদান রয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ছিলেন। ঠাকুরগাঁওয়ের সদর হাসপাতাল, শিবগঞ্জ এরায়পোর্ট নির্মাণে ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে শহরের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁর বলিষ্ট ভূমিকা ছিল স্মরণযোগ্য।

ফজলুল করিম সদালাপী সুমার্জিত ব্যবহারের অধিকারী। তাঁর সততা সর্বজন বিদিত। তাই তিনি সকল মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন।

আলহাজ ফজলুল করিমের জীবন ছিল বর্ণাঢ্য, তিনি যেমন ধর্মনিরপেক্ষ তেমনি সংস্কৃতিবান ছিলেন। তিনি ক্রীড়া জগতেও অবাধে বিচরণ করেছেন, ফুটবল খেলতেন। ঠাকুরগাঁও নাট্য সমিতির সম্পাদক ও শেষে সভাপতি ছিলেন। ফজলুল করিম ৯ জানুয়ারি ২০১৫ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews