
কামাল উদ্দিন, চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের আরবশাহ বাজার দখলে নিতে বাঁশখালীর পুঁইছড়ি এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ এর কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ কমিটির সদস্য পরিচয়ে এরশাদুর রহমান চৌধুরী নামের কথিত এ নেতার নের্তৃত্বে শতাধিক স্বসস্ত্র লোকজন শোডাউন ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করার গুরতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাজারের দখল ঠেকাতে বাজারের ব্যাবসায়ী ও রাজাখালীর অন্তত কয়েকশ লোক মুখোমুখি অবস্থানের খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছেঁ বিরাজমান থমথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ নিয়ে পেকুয়া থানায় রাজাখালী আরবশাহ বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ আলম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সরেজমিনঃ বর্তমানে পেকুয়া-বাঁশখালীর লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পেকুয়া থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বড় ধরণের সংঘর্ষ থেকে সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে দুই পক্ষের লোকজন। পেকুয়া আরবশাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ স্থানীয়
ব্যাবসায়ীরা জানান, বাঁশখালীস্থ পুুইছড়ি এলাকার লোকজন বাজারের এসে অস্ত্রসহ মহড়া দেন। মাস্ক বিতরণের কথা বলে আরবশাহ বাজারের খুঁচরা ব্যবসায়ীদের জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য হুমকি দেন।
রাতে জানতে পারেন গতকাল ১০ এপ্রিল (শনিবার) সকালে আ’লীগ নেতা এরশাদুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুঁইছড়ির লোকজন আরবশাহ বাজার দখল করতে আসবে। এরপর আমরা পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
এদিকে গতকাল ১০এপ্রিল সকাল থেকে এরশাদুল রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুঁইছড়ির লোকজন বাজারে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। প্রতিরোধ করে রাজাখালীর লোকজন।
এরই মাঝে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দেন। সর্বশেষ পুলিশের কথা অগ্রাহ্য করে পুঁইছড়ির লোকজন বাজারে অবস্থান নিতে চেষ্টা করলে রাজাখালীর লোকজনের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল বশর ও আকতার হোসেন বলেন, পৈত্রিক সূত্রে দাদার দিনের জমি পাবে দাবি করে সন্ত্রাসী কায়দায় বাজারটি দখল করার চেষ্টা করে পুঁইছড়ির লোকজন। ইতিপূর্বে ৯এপ্রিল সসস্ত্র শতাধিক লোকজন নিয়ে এসে বাজারে আতংক সৃষ্টি করে বাজার দখল নিতে ফাঁকা ২ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।
পুলিশ প্রশাসনের বাধা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা ছাবের আহমদ ও বাজার সদস্য মনির আহমদ বলেন, যেকোন মূহর্তে তারা আবারো দখল চেষ্টা চালাবে বলে শঙ্কা রয়েছে ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পেকুয়া থানার এসআই ছিদ্দিক আহমদ ও আব্দুল হক বলেন, মাস্ক বিতরণের কথা বলে বাঁশাখালীর কিছু লোক আরবশাহ বাজারে এসে বাজার দখলে নিতে চেয়েছিল। দুই পক্ষে সংঘর্ষে আশঙ্খা দেখা দেয়ায় পুলিশ বাজারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে বাজারের প্রবীণ মুরব্বী ব্যবসায়ীরা জানান, পৈত্রিক সূত্রে আরএস মূলে আরবশাহ বাজারের সমূহ জমির মালিক বাঁশখালী পুইছড়ির আরবশাহ পরিবারের থাকলেও তারা ১৯৭০ সালে স্থানীয় মৃত মোঃ কবির মিয়া চৌধুরী ও আহমদ কবির চৌধুরী গংদের কাছে বিক্রি করে তৎসময়ে নিঃস্বত্ববান হয়ে যান তারা।
পরে কবির মিয়া চৌধুরীর পরিবার স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজাখালী বিইউআই ফাজিল মাদ্রাসা ও রাজাখালী ফয়জুননিছা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ওয়াকফ করে দেন।
যাতে প্রতিষ্ঠান ২টি আর্থিক দৈন্যতা না থাকে। সূত্র মতে, ১৯৮৩তে বিএস রেকর্ড ও ২০০১ সালে দিয়ারআর জরিপ মূলে উপরোক্ত জমির জরিপ হয় মোঃ কবির মিয়া চৌধুরীর গংদের নামে। সেই ১৯৭০ সাল হতে অদ্যবদি ৫১ বছর যাবত ওয়াকফ মূলে আরবশাহ বাজার উপরোক্ত ২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলে থেকে বর্তমানে ও ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বাজার কমিটি নিয়ন্ত্রণে আরবশাহ বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে।
পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাঁশখালীর কথিত আওয়ামীলীগ নেতা এরশাদুর রহমান চৌধুরী দূর্লোভের বসবর্তী হয়ে এবং দলবাজি করে আলাদা উপজেলা পেকুয়ায় এসে দাদার জমি দাবি করে আরবশাহ বাজার দখল নেয়ার পায়তারা করছে বলে মনে করছেন ব্যাবসায়ীরা।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply