ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির (বারের) আরও ১২ জন আইনজীবী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সায়েম মো. মুরাদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৩ জুন রাতে তার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাসায় থেকে তাকে অক্সিজেন নিতে হচ্ছে। এর আগে গত ২০ জুন তার স্ত্রী ডা. শারমিন জাহানের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তিনিও বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের ২২ মাসের একটি শিশুকন্যা রয়েছে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু সিদ্দীক ওসমানী ও তার পরিবারের ৮ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত (রিপোর্ট পজেটিভ)। তারা নিজ জেলা কক্সবাজারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. কামরুল হক সিদ্দিকী অ্যাসোসিয়েটসের শাকলান ইমন এবং সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী এম. আমিন উদ্দিন অ্যাসোসিয়েটসের ফারিহা জামান আইনজীবী দম্পতির কোভিড-১৯ পজিটিভ। তারা দু’জনই এখন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মহামারি করোনায় ভীত না হয়ে অসহায় মানুষের ও আইনজীবীদের কল্যাণে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে সেলফ আইসোলেশনে আছেন নব্বইয়ের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন। তবে তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ।
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ওবাইদুর রহমান কালু খানের করোনা পজিটিভ। জানা গেছে তিনি সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান খানের ভাই।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলু করোনা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি ছিলেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে গত ২৩ জুন তাকে ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির দুই সদস্য অ্যাডভোকেট রিপন পাটোয়ারী এবং শফিউল আলম মন্নান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, অ্যাডভোকেট জাকারিয়া মোল্লা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে (গ্রীন রোড, ঢাকা) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাজশাহী আইনজীবী সমিতির (বারের) সদস্য সুনির্মল সরকার পান্নার করোনাভাইরাস পজিটিভ। তিনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জানা গেছে, ফৌজিয়া করিম রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন। তিনি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। ঈদের দিন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার করোনা পজিটিভ আসে। এর পরের দিন ২ জুন আইনজীবী ও সাবেক ছাত্রনেতা রবিউল আলম বুদু রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, তারা দু’জনই চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মারিয়াম তৈমুর খন্দকারও করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসা নেন। এ এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক খান করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনিও সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
এরপর পর্যায়ক্রমে সুপ্রিম কোর্টের কমপক্ষে আরও ১৫ জন আইনজীবীর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আটজন আইনজীবী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়ে লালমনিরহাট জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) ফেরদৌস আহমেদ বুধবার (২৪ জুন) রাত ৮টার দিকে সিএমএইচে মারা গেছেন।