সোহেল রানা,নওগাঁঃ-
নওগাঁর বদলগাছীতে এক কিলোমিটারে ৮ টি অবৈধ ইটভাটার কারণে জনজীবন দূর্বিষহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে চরম হুমকির মুখে জীবন যাপন করছেন উপজেলার চারটি গ্রামের সাধারন মানুষেরা।
উপজেলার মালঞ্চ,শালবন,গন্ধবপুর,পাঁচঘরিয়া পাশাপাশি চারটি গ্রাম।এই চারটি গ্রামে মাত্র এক কিলোমিটারের দূরর্ত্বের ব্যাবধানে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জনবসতির মধ্যেই দেখাদেখি গড়ে উঠেছে ৮ টি অবৈধ ইটভাটা। এখান হতে আধাঁ কিলোমিটার দক্ষিনে আধাঁ কিলোমিটার দূরর্ত্বের ব্যাবধানে জগৎনগর ও সাগরপুর মৌজাই রয়েছে আরও দুইটি ইটভাটা। মাত্র এক কিলোমিটারের ব্যাবধানে এতগুলো ইটভাটার কারণে এলাকাবাসীর জীবন হয়ে উঠেছে দূর্বিষহ।
অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা এসব ভাটা মালিকরা ক্ষমতাশীল দলের স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় নিয়মের তোয়াক্কা না করেই মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দিয়ে বদলগাছী উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার উপজেলার তিন ফসলি জমি মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে সেইসব ইটভাটাই।
এতে যেমন ফসলি জমিগুলো হয়ে পরছে অনাবাদী তেমনি দিনরাত রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতির অবৈধ মেশি ট্রাক্টর চলাচল করায় স্থানীয়দের চলাফেরা হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। মাটি বহনকারী মেশি ট্রাক্টরের চাঁকার কারনে নষ্ট হচ্ছে সরকারের নবনির্মিত রাস্তাগোলো পাশাপাশি সেইসব পাকা রাস্তায় দিনের বেলাতেই ধুঁলা বালির কারণে সবসময়ে অন্ধকার হয়ে থাকে। যার কারনে হাঁপানি,আজমাসহ দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। আর ইটভাটার দূষিত ধূঁয়ার কারনে এ এলাকার ফলজ গাছগুলো এখন অনেকটা ফলশূন্য। আর ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসাসহ গর্ভবতী মায়েদের জন্য এ দূষিত ধুয়া আরও ঝুঁকিপূর্ণ।
এছাড়া কয়েকটি ইটভাটায় কয়লার পরির্বতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এমন দৃশ্য নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর ইউনিয়ন,মিঠাপুর ইউনিয়ন,মথুড়াপুর ইউনিয়ন,কোলা ইউনিয়নে। শুধু এইসব ইউনিয়ন নয় এ উপজেলা জুড়ে রয়েছে এরকম আরও ২৬ টি ইটভাটা যার সবগুলোই অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাটা। যাদের নেই কোন পরিবেশ লাইসেন্স বা অন্য কোন কাগজপত্র। অথচ প্রশাসন এখানে একেবারেই নিরব কেন তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে তারা প্রশাাসনকে ম্যানেজ করেই চালাই এসব অবৈধ ইটভাটা গুলো।
স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হোসেন দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, এখানে ৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা স্বর্তেও মাত্র এক মিলোমিটারের ব্যাবধানে জনবসতির মধ্যেই অবৈধ ভাবে ৮ টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। প্রতিযোগিতা মূলকভাবে একজন মালিকই একাধীক ইটভাটা নির্মান করেছে। ভাটাগুলোর কারনে প্রতি মূহুর্ত্বে যেভাবে দ্রুত গতির অবৈধ ট্রাক্টর চলাচল করে তাতে ধূলোর দিনের বেলায়ও রাস্তাগুলো অন্ধকার হয়ে থাকে। সেজন্য ছেলে-মেয়েদের একা স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। আর সব সময় ধুলোর কারনে রোগ-বালায় তো লেগেই আছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। এখানে সামান্য দূরুত্বে এত ইটভাটার প্রয়োজন নেই । বৈধভাবে একটি ইটভাটা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষন করছি।
পাঁচঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুবিদ মহন্ত আক্ষেপ করে বলেন,কৃষকদের মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে ফসলি জমি হতে ইটভাটাগুলোতে যেভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে কিছু দিনের মধ্যেই এ এলাকার আর কোন ফসলি জমি আবাদের উপযুক্ত থাকবে না। ইটভাটার মালিকরা অনেক প্রভাবশালী। আমরা যুবকরা কোন প্রতিবাদ করলে উল্টো আমাদেরই হুমকিসহ মামলার ভয় দেখানো হয়। আমরা বহুবার প্রশাসনকে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমি দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।
অপরদিকে সাধারন জনগণের অভিযোগ প্রশাসনের যোগসাজশেই চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা গুলো। নাম প্রকাশে আনইচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, প্রশাসন তাদের সম্পর্কে সবকিছুই জানে তবুও কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। আরও বলেন দেশের ইতিহাসে জরিপ করে দেখা গেলে সবচাইতে বেশি অবৈধ ইটভাটা আমাদের নওগাঁর বদলগাছী উপজেলাতে হবে।
এমন অভিযোগে দৈনিক সূর্যোদয় অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারে প্রশাসনের নীরবতা ও তাদের যোগসাজশেই চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা গুলো এমনকি লাইসেন্স বিহীন এসব ইটভাটার মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়াই তাদের কথায় চলে প্রশাসনের তদারকি এরফলে সাধারন মানুষেরা প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রশাসনের হয়রানির শিকার হতে হয়। বিস্তারিত আরো আসছে—-
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..