কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
Facebook Twitter share
কুড়িগ্রামের উলিপুরে দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষা ও নারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে শতাধিক নারী-শিশু-পুরুষ উপজেলা সদরে বিক্ষােভ প্রদর্শন করেন।২৬মে বুধবার উপজেলার ধরনী বাড়ী ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
Surjodoy.com
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানা যায়,ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমি ও গৃহ প্রদান আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় উলিপুর উপজলার১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩শ৫০টি গৃহ নির্মানের বরাদ্দ আসে। সে মােতাবেক প্রথম পর্যায় ২শ গৃহ নির্মান কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমান ১শ ৫০টি গৃহ নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে।এই প্রকল্পের আওতায় ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের শতাধিক ঘর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
The Daily surjodoy
উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ির দেবোত্তর সম্পত্তির সেবায়ত পঙ্ক চন্দ্র মহন্ত(৬৫) বলেন,ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের তৎকালীন
জােতদার ব্রজেন্দ্রলাল মুন্সির দানকৃত ১৮একর দেবত্তর সম্পত্তিতে শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, লক্ষী নারায়ন মন্দির এবং রাধা গােবিন্দ জিউ মন্দির রয়েছে। সেখানে আমরা দীর্ঘদিন থেকে পূর্জা অর্চনা, প্রসাদ বিতরণ, সেবায়তর ভরণপােষণ, মন্দিরের সংস্কারসহ সার্বিক ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছি। তিনি দাবী করেন এই জায়গা জমি দেবাত্তর সম্পত্তি।
The Daily surjodoy
কিছুদিন থেকে উপজলা প্রশাসন দেবোত্তর সম্পত্তিকে সরকারি খাস জমি দাবী করে সেখানে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য শতাধিক গৃহ নির্মানের কাজ শুরু করেন। ইতিমধ্যেই অর্ধেক গৃহের কাজ সমাপ্ত করেছেন। মন্দির সংলগ্ন জমিত আমরা প্রতিবছর অষ্টপ্রহর ও নাম কীর্ত্তন করে আসছি। সেই জমিতে গৃহ নির্মানের কাজ শুরু করলে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় এতে বাঁধা দেন। এ বিষয়টি নিয়ে ১০-১২ দিন থেকে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে একাধিকবার এসে মিটিং করে মদ্নির সংলগ্ন জায়গায় গৃহ নির্মান করা হবে না বল প্রতিশ্রুতি দেন। আজ সকালে দেবোত্তর সম্পত্তিতে আবারও গৃহ নির্মানের কাজ শুরু করলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়র নারী-শিশু ও পুরুষ সকল মিলে এতে বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় গৃহ নির্মান কাজর তদারকির দায়িত্ব থাকা কয়কেজন নারীদের উপর হামলা চালায়।
The Daily surjodoy
হামলার শিকার জবা রানী (২৬) বলেন, মন্দিরের জমি রক্ষার দাবীতে আমরা ঘর
তুলতে বাঁধা দেয়ায় উপস্থিত প্রশাসনের সামনে মুক্তা ও তার লােকজন আমাদের গায়ে হাত দেয়। এ সময় তারা আমাদের পড়নের কাপড় ছিড়ে ফেলে ও মারপিট করে হাতের আঙ্গুলসহ বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশি রাসেল মিয়ার উপরও তারা হামলা করে। ঘটনার প্রতিবাদ আমরা বুধবার বিকেলে উপজেলা সদর বিক্ষােভ মিছিল করতে গেলে সেখানও তারা আমাদের উপর আক্রমণ করেন। এ ঘটনায় এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষােভ ও আতংক বিরাজ করেছে। আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন।
The Daily surjodoy
মন্দিরের পূজারী রতন মহন্ত (৩২)বলেন, দেবোত্তর সম্পত্তিতে পূর্বও তারা ৫০টির অধিক গৃহ নির্মাণ করেছে। বর্তমান মন্দিরে সংলগ্ন জমিতে তারা গৃহ নির্মাণ করার সামগ্রি ইট-বালু এনে ফেলেছে।এতে আমরা আপত্তি করলে উপজেলা সদর থেকে মুক্তার নেতৃত্ব একদল যুবক এসে মহিলাদের উপর হামলা চালায়। আমরা দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষা ও হামলার বিচার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাই।
The Daily surjodoy
বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ উলিপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সমেন্দ্র প্রসাদ পান্ড গবা জানান, ওই সম্পত্তি ইতিপূর্বে সরকার খাস খতিয়ান নেয়।সেখান সামান্য কিছু দেবাত্তর সম্পত্তি রয়েছে। মন্দির সংলগ্ন জমিতে যেন গৃহ নির্মাণ না হয় সে বিষয় আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।
The Daily surjodoy
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সদস্য সচিব সিরাজ উদ দৌলা বলেন,দেবাত্তর সম্পত্তিতে গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে না। মন্দির সংলগ্ন জায়গায় গৃহ নির্মাণ করা হয়নি। ভূমি অফিস কর্তৃক দেয়া সরকারের খাস জায়গায় গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে। জায়গাগুলা পূর্ব দপবাত্তরের সম্পত্তি ছিল। তিনি আরও বলেন, নির্মাণ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় স্থানীয় লােকজন দেবাত্তর সম্পত্তি দাবী করে তা ভেঙে দেন। এ সময় আমাদের পক্ষ থেকে দেখা শুনার দায়িত্ব থাকা মুক্তা নামের একজন বাঁধা দিলে তার উপর হামলা চালানাে হয়। মুক্তার লােকজন কর্তৃক মহিলাদের উপর হামলার বিষয় জানতে চাইল তিনি বলেন, ঘটনা সঠিক নয়।
The Daily surjodoy
উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রকল্পের সভাপতি নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন,সেখানে হামলার কােন ঘটনা ঘটেনি। যারা বিক্ষােভ মিছিল করেছেন তারাই গৃহ নির্মাণের কাজের লােকজনের উপর হামলা চালিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায় নেতাদের সঙ্গে দ্রুত বসা হবে।
The Daily surjodoy
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ কবীর বলেন, মন্দির এলাকায় সরকারি ঘর নির্মানকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ বিক্ষােভ মিছিল হলেও এখনও কেউ লিখিত অভিযােগ দেয়নি। অভিযােগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply