শখের জালে ধরা পড়লো ২৯ কেজির বিশাল বাঘাইড়
নিজস্ব প্রতিবেদক: | ২৮ মে ২০২১ | ১০:০২ অপরাহ্ণ
শখের জালে ধরা পড়লো ২৯ কেজির বিশাল বাঘাইড়
FacebookTwitterShare
বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদীতে বেড়েছে পানি। এই পানিতেই ভরে উঠেছে নদী তীরবর্তী পুকুর ও ডোবা। এমন এক ডোবায় শখের বসে মাছ ধরতে গিয়ে ধরা পড়লো বড় আকৃতির বাঘাইড় মাছ।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কৃষকের জালে ধরা পড়েছে মাছটি। শুক্রবার সকালে উপজেলায় কাকৈরপড়া ইউপির গন্ডাবের এলাকায় স্থানীয় কৃষক হারুন বিশ্বাস ২৯ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছটি শিকার করেন।
surjodoy.com
স্থানীয়রা জানান, ডোবার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কংস নদীতে বেড়েছে পানি। ডোবার সঙ্গে নদীর সংযোগ থাকায় নদীর পানি সহজে যাতায়াত করে ডোবায়। পানি বাড়ায় এলাকার জেলে ও কৃষকরা এখন ব্যস্ত মাছ ধরায়। অনেকেই শখের বসেই নেমেছেন মাছ ধরতে। সকালে অন্যদের দেখাদেখি কৃষক হারুন বিশ্বাস বাড়ির পাশে ডোবাতে সাধারণ একটি নেট জাল নিয়ে নামেন মাছ শিকারে। জাল দিয়ে ছোট বড় বেশ কয়েকটি মাছ শিকারের পর হঠাৎ বড় একটি কিছুতে আটকে পড়েছে তার জাল। প্রথমে গাছের গুড়ি ভেবে পাত্তা না দিলেও জাল ধরে ওপরে তোলার চেষ্টা করলে নাড়াচাড়া করায় সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় মাছটিকে তোলা হয়।
The Daily surjodoy
মাছ ধরার এই খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মাছ দেখতে । ছুটে যান মাছ ব্যবসায়ীরাও। ২৯ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছটি দাম উঠে ৪৬ হাজার টাকা। তবে বাজারে মাছটি বিক্রি না করলেও এলাকাবাসী ৩৬ হাজার টাকা মূল্য ধার্য্য করে ভাগ ভাটোয়ারা করে নেন বিশালাকৃতির বাঘাইড়টি।
The Daily surjodoy
বাঘাইড় সাধারণত পাহাড়ি ঝরনা ও খরস্রোতা পাহাড়ি নদীর বড় বড় পাথরের গর্তেই জন্ম ও বেড়ে উঠে। অনেক সময় পানির স্রোতে মাছগুলো উজান থেকে ভাটিতে নেমে আসলে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। এই থেকেই স্থানীয়রা ধারণা করছেন ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের পাড় ঘেঁষে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর নদী থেকেই হয়তো এসেছে মাছটি। কিছুদিন আগে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলে ভাসতে ভাসতে কোনো এক সময় কংস নদী হয়ে ডোবার পানিতে আশ্রয় নেয় বাঘাইড় মাছটি।
The Daily surjodoy
কৃষক হারুন বিশ্বাস জানান, শখের বশে ডোবায় মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। কয়েকটি মাছ ধরার পর পানিতে কনুই জাল ফেলতেই হঠাৎ জালটি আটকে যায় । পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ধৈর্যের সঙ্গে টেনে উপরে তুলতে বিশাল আকৃতির মাছটি চোখে পড়ে। মাছটি প্রায় ২৯ কেজি। মাছ ব্যবসায়ীদের একজন ৪৫ হাজার দর-দাম করলেও এলাকাবাসীর কাছে ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করি।
The Daily surjodoy
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুমন কুন্ডু জানান, সোমেশ্বরী নদী পাহাড়ি নদী হওয়ায় বড় আকৃতির বাঘাইড় মাছসহ অন্যান্য মাছ পাওয়া যেতো। এই নদী উপজেলার ঝানজাইলে কংস নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দুই নদীর মোহনায় এখনো ছোট-বড় অনেক মাছ পাওয়া যায়। তবে কালের বিবর্তনে এখন আগের মতো নদীতে বড় আকৃতির এমন মাছ তেমন একটা দেখা মেলে না। তবে দুই একটা হঠাৎ জেলেদের জালে ধরা পড়ে। নদীর মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি যেন আগের মতো নদীতে মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।