ডেস্ক : ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতের সমাবেশে যোগ দিতে আসা ১২৯ জন বিদেশি তাবলীগ সদস্যকে চেন্নাইয়ের একটি বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন।
বিবিসি বাংলা জানায়, ভারতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিদেশি তবলীগ সদস্য আটক আছেন। অভিযোগ উঠেছে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও তাদের ছাড়া হয়নি।
চেন্নাইয়ের পুল্লাল কারাগারের ভেতরেই একটি ভবনকে বন্দিশিবির নাম দেওয়া হয়েছে। যেখানে নয়টি দেশের ১২৯ জন তাবলিগ জামাত সদস্য আটক আছেন।
বন্দিদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা এ কে সামসুল হক। তার ছেলে এহতেশাম ইবনে শামস বলেন, মাস দুয়েক বাবার খোঁজই পাননি তারা।
তিনি বলেন, ‘বাবা ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দিল্লি গিয়েছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে লকডাউন হয়ে যায় ওখানে।’
এহতেশাম বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও খোঁজ পাচ্ছিলাম না। মাস দুয়েক পরে জানতে পারি যে বাবাকে চেন্নাইতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধরার সময়েই তো টাকা পয়সা, মোবাইল সব নিয়ে নিয়েছিল। তাই কোনো যোগাযোগই করা যায়নি।’
জানা গেছে, ১২৯ জন বিদেশি তাবলিগ জামাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় তামিলনাডুর ১৫টি জায়গা থেকে মার্চ আর এপ্রিলের শুরুতে। এদের মধ্যে ১২ জন নারীও আছেন।
তামিলনাডুর রাজনৈতিক নেতা এম এইচ জাওয়াহিরউল্লা বলেন, ‘পুলিশ এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তামিলনাডু গণস্বাস্থ্য আইন অনুযায়ী। বলা হয়েছে, এরা রোগ ছড়াচ্ছিলেন। তাছাড়াও বিদেশি আইনের দুটি ধারা অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে ভিসার নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগও আনা হয়েছে।’
ইতোমধ্যে ৮ জন নারীসহ ৯৮ জন তাবলিগ সদস্যকে জামিন দিয়েছে বিভিন্ন আদালত। জামিন পাওয়ার পরেও তাদের বন্দিশিবির থেকে ছাড়া হয়নি।
আর বাকি ৩১ জন তাবলিগ সদস্যকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ। কিন্তু তাদেরও পুল্লাল জেলের আরেকটি ভবনে রাখা হয়েছে।
জাওয়াহিরউল্লা বলেন, ‘একটি ভবনে বড়জোর ৩০ থেকে ৪০ জন থাকতে পারে। কিন্তু সেখানে ৯৮ জনকে রাখা হয়েছে। আইন অনুযায়ী নারীদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করার কথা, সেটা মানা হয়নি।’
বিদেশি তাবলিগ জামাতের সদস্যদের বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে। আদালত প্রশ্ন, বিদেশি নাগরিকদের যদি কালো তালিকাভুক্ত করে ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তাদের কেন এখনো ভারতে রেখে দেওয়া হয়েছে? কেন তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়নি?