ক্ষেতলাল তুলশীগঙ্গা বাঁধের গাছ যাচ্ছে বনকর্তার পেটে
ওয়াকিল আহমেদ,ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল তুলশীগঙ্গা নদী খনন করার সময় বনবিভাগের লাগানো দু’পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতীর ছোটবড় হাজার হাজার গাছ ঠিকাদারের লোকজন ও বনকর্মকর্তার যোগসাজসে উপড়ে ফেলে স্থানীয় দুই ব্যক্তির দ্বারা বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই এলাকায় বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বন কর্মকর্তার দাবী বাধ সংস্কার করতে ভেকু দিয়ে যে গাছগুলি নষ্ট হচ্ছে তা উপকার ভোগীদের নিকট জিম্মায় রাখা হচ্ছে। জিম্মাদার বলছেন প্রতিদিন গাছ বিক্রির টাকায় লেবার বিল, গাড়ীভাড়া বাদদিয়ে বাঁকী টাকা বন বিভাগের সাথে ভাগাভাগী হয়।
সংশ্লিষ্ট’রা বলছে, উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে ক্ষেতলাল সীমানা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বন বিভাগের অর্থায়নে কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো রয়েছে। ওই গাছগুলি দেখভাল করেন বন বিভাগের লোকজন। তথ্য নিশ্চিত করেছেন ক্ষেতলাল বন কর্মকর্তা মিঠু তালুদার।
গত শনিবার (১৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে ,উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের সন্ন্যাসতলী ঘাট এলাকার পূর্ব পাড়ে নদীর খনন কাজ চলছে। নদীর তলদেশ থেকে এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে নদীর দু’পাড়ে মাটি ভরাট করছে ঠিকাদারের লোকজন। নদীর পাড়ে মাটি ভরাট করার সময় ক্ষেতলাল বনবিভাগের লাগানো সারি সারি গাছগুলি ভেকু মেশিন দিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। ওই উপড়ে ফেলা গাছগুলি স্থানীয় দুই জন ব্যক্তি তত্তাবধানে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপকারভোগী’রা। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা আসেনি। বললেন- প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে সূর্যোদয় প্রতিনিধি- ক্ষেতলাল উপজেলা বন কর্মকর্তা মিঠু তালুকদার এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন- উপড়ে ফেলা গাছ ব্যক্তিগত ভাবে বিক্রির কোন সুযোগ নাই। নদীর পাড়ে মাটি ভরাট করার সময় ভেকু দ্বারা যে দু’চারটি গাছ বা ডাল নষ্ট হচ্ছে সে গুলি ওই এলাকার উপকারভোগী আঃ ছামাদের জিম্মায় রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে গাছগুলি অফিসে আনা হবে।
জিয়াপুর গ্রামের উপকারভোগী ও জিম্মাদার আঃ ছামাদ। তিনি বলেন- ভেকুর ড্রাইভার সারাদিন কাজ শেষে যতগুলো গাছ উপড়ে ফেলে সে গাছগুলি লেবার দিয়ে একত্র করে টলির বগী দিয়ে বাজারে বিক্রি করি, এলাকার লোকজন কিছু ছোট গাছ ও ডালপালা নিয়ে যায়। লেবার বিল, গাড়ী ভাড়া বাদ দিয়ে যে টাকা থাকে ওই টাকা আমি একা পাইনা সবাইকে দিতে হয়। সবাই বলতে কারা কারা জানতে চাইলে বলেন- আমি কিছু পাই, লেবার বিল, গাড়ীভাড়া আবার বন বিভাগকে দিতে হয়।
নদী খনন ঠিকাদারের নাইট গার্ড মোজাহার সরদার (৫০)। তিনি বলেন-গত কয়েক দিনে গাড়ীর ড্রাইভার জনৈক চমো মিয়া আর আঃ ছামাদ ১৮ থেকে ২০ গাড়ী গাছের গুড়ি ও খড়ি বিক্রি করেছে। ওইসব কাঠ ও খড়ি দিনের বেলাই এক জায়গায় একত্র করে রাতে গাড়ী লাগিয়ে নিয়ে যায়। বনবিভাগের লোক মাঝে মধ্যে আসে আমি অভিযোগ দিলে উল্টো আমাকে’ই ধমক দেয়।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএফএম আবু সুফিয়ান তিনাকে বিষয়টি জানানো হয়। তিনি বলেন- বিষয়টি আমি দেখছি।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..