ভারতকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে এবার নিজের দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতারাই তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
মঙ্গলবার বালুওয়াতরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ক্ষমতাসীন দলের শক্তিশালী স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল দাহাল ওরফে “প্রচণ্ড”কে পি ওলির মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, তাকে কুর্সি থেকে সরানোর জন্যে ভারত ষড়যন্ত্র করছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে তো গ্রহণযোগ্য নয়ই, কূটনৈতিকভাবেও উপযুক্ত নয়। প্রধানমন্ত্রীর এ জাতীয় বক্তব্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে, সকলকে সতর্ক করে দিয়ে একথাও বলেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি বলেন, তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য “দূতাবাস এবং হোটেলগুলোতে” বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম চলছে। কিছু নেপালি নেতাও এই খেলার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
তবে ওলির বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে তার দলই। শীর্ষ নেতা প্রচণ্ড ছাড়াও অভিজ্ঞ নেতা মাধব কুমার নেপাল, ঝালানাথ খানাল, সহ সভাপতি বামদেব গৌতম এবং মুখপাত্র নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠাও প্রধানমন্ত্রী ওলিকে তার করা অভিযোগের প্রমাণ দিতে বলেছেন। পাশাপাশি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তার পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ জাতীয় “কূটনীতিবিরুদ্ধ ও অরাজনৈতিক মন্তব্য করার পরে নৈতিক ভাবেই পদত্যাগ করা উচিত।” তবে বৈঠকে উপস্থিত কেপি ওলি যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
রবিবার এক অনুষ্ঠানে সরাসরি ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে ওলি বলেন, “নেপালের সংবিধান সংশোধনের পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে দিল্লি।” নতুন মানচিত্র তৈরির জন্যই তার প্রতিপক্ষদের উসকানি দিয়ে সরকার ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নেপালের সংবিধান সংশোধনের বিষয় নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক করার কী দরকার, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
“আমার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোই আসল উদ্দেশ্য। যদিও, এই চেষ্টায় কোনওভাবেই সফল হবে না ভারত। কারণ, নেপালের জাতীয়তাবাদ অত ঠুনকো নয় যে কেউ বাইরে থেকে সরকার ফেলে দেবে। আমিও কোনও ভাবে বাইরের কোনও শক্তির কাছে মাথা নোয়াবো না। কারণ আমি সরে গেলে নেপালের জাতীয়তাবাদ ও সীমানা নিয়ে দাবি জানানোর আর কেউ নেই”, ওই অনুষ্ঠানে একথাও বলেন কেপি শর্মা ওলি।