কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :
নওগাঁর রাণীনগরে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ফলে ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আরও ১৫ দিন সময় বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার আশা দেখলেও ধান নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে স্থানীয় বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে ধান সংগ্রহ অভিযান থুবরে পড়েছে।
রাণীনগর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা তারেকুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে ২৭ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করার লক্ষ্যে ২৮ মার্চ ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। এছাড়া ৪০ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৮৩৭ মেট্রিক টন চাল মিলারদের নিকট থেকে ক্রয় করার জন্য ১১ মে সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের দিন থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন ধানের মধ্যে মাত্র ৭৯১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে চাল সংগ্রহে উপজেলার ১২২ জন মিলারের সঙ্গে চুক্তি করায় চুক্তি অনুযায়ী এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৪২ মেট্রিকটন চাল দিয়েছেন।
যদিও চলতি মাসের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় চলতি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু স্থানীয় বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে মণপ্রতি ২শ‘ থেকে আড়াইশ‘ টাকা বেশি দরে ধান বিক্রি করতে পারায় কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছেন না।
কালীগ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান,নারায়ন পাড়ার বাবু,সিম্বার মকলেছুর রহমান,ভেটির সামছুর রহমানসহ কৃষকরা জানান,সরকার ২৭ টাকা কেজি দরে মোটা ধান নিধারন করেছেন।কিন্তু আমাদের এলাকায়তো আমারা জিরাশাইল, কাটারীভোগ ,চিনি আতবসহ নানান ধরণের চিকন জাতের ধান চাষ করি। আমাদের চিকন ধানের দামতো বাড়ায়নি।
এমনিতে খোলা বাজাওে সাড়ে ১২শ‘ থেকে ১৩শ‘ টাকা ধরে ধান বিক্রি করছি। ফলে থাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছিনা।
উপজেলার আবাদপুকুর বাজারের ধান-চাল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলু মন্ডল জানান, গত রবিবার আবাদপুকুর বাজারে প্রতিমণ জিরাশাইল ধান ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং কাটারীভোগ ধানও ১হাজার ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
রাণীনগর উপজেলা ধান-চাল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিতানাথ ঘোষ বলেন,মাঝখানে চালের দাম বেশি থাকায় অনেকেই চাল দিতে পারেনি। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৪/৫ টাকা করে দর কমেছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পুর্ণ চাল সরবরাহ করা হবে বলে আশা করছেন তিনি।
ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন,এক্ষুনি চালের দর কিছুটা কমে যাওয়ায় হয়তো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কিন্তু খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা ধান দিচ্ছেন না। তবে এসব বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply