আকাশ র্মামা মংসিং বান্দরবানঃ
বান্দরবানে রুমা উপজেলার বটতলী পাড়া মানুষের যাতায়াতে সুবিধার্থে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার সড়কের চলমান নিমার্ণধীন কার্পেটিং রাস্তার কাজ শুরুতেই নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ ও অনিয়মের ফলে সড়কে অনেক স্থানের গর্ত আর ভেঙ্গে পড়েছে। তাছাড়া কাজের ব্যবহৃত মালামাল রাস্তা পাশে কিছু কিছু জায়গা স্তুপ করে রাখার কারণে বৃষ্টি পানিতে কাঁদা জমিয়ে স্থানীয়দের চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। চলমান নিমার্ণধীন ওই সড়কে অনেক স্থানে ভেঙ্গে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। সেই খানাখন্দ রাস্তার দিয়ে ওই এলাকা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় আর্থিক ভাবে সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। এ বিষয়ে কাজের নিয়োজিত ঠিকাদারকে স্থানীয়রা রাস্তার বেহাল অবস্থা থেকে প্ররিত্রাণ পেতে কয়েকবার অবহিত করার হলেও তা আমলে নিচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার বেগ পেতে হচ্ছে বলে এড়িয়ে যান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, বান্দরবান সদর হতেই রুমা উপজেলা যাওয়ার পথে রুমা সদর হতে ৫ কিলোমিটার দূরত্ব বটতলী গ্রাম। পাড়াবাসী দাবিতে দীর্ঘদিন পর ব্রিক সোলিং রাস্তা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি)। সেই কাজে তরিঘরি করে কোন রকম নি¤œমানের কংকর দিয়ে রোলার পিচ ঢালাই কাজ শুরু করেছে। তারই মধ্যে কয়েকদিন বৃষ্টি পানিতে ভেঙ্গে গিয়ে খানাখন্দ হয়েছে। চলাচল একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, রুমা উপজেলার যাওয়ার পথে মেইন রাস্তা হতে বটতলী পাড়া গ্রামীণ সড়কে কার্পেটিং রাস্তা ২০১৯-২০২০ সাল অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কে কার্যাদেশ পায় অন্তত বিকাশ প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দশ কোটির টাকা। কাজটি অন্তত বিকাশ পেলেও বান্দরবান ঠিকাদার মোজ্জাফর ও রতন কান্তি দাশ কাজটি বাস্তবায়ন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামে প্রবেশ মুখে নামতি রাস্তা দেখা যায় নিম্ন মানে কংকর দিয়ে তৈরী হচ্ছে কার্পেটিং-এর কাজ। বর্ষাকালে কাজটি শুরু করার কারণে নাজেহাল অবস্থা মুখে পড়ে সড়কটি। সেই সড়কের প্রতিনিয়ত সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বড়বড় ট্রাক (ডামপার) দিয়ে মালামাল সরবরাহ করছে। চলমান নরম রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করার কারণে কিছু কিছু স্থানে রাস্তা ভেঙ্গে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ আর ছোট ছোট জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিত্যদিনের জীবিকা নির্বাহ তাগিদে বাধ্য হয়ে ওই জলাবদ্ধতা রাস্তা হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিশেষ করে অফিস গামী মানুষরা সেই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে তাদের পড়নের কাপড় কাঁদামাটি সাথে মিশে নষ্ট হয়ে যায়। চলাচলে করতে গিয়ে এলাকাবাসীদের ভৌগান্তি আর ক্ষোভের শেষ নেই।
পাড়াবাসীরা জানান, নিম্ম পর্যায়ের কংকর ও ইট দিয়ে শুরুতে কাজটি করেছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া পাহাড়ী অঞ্চলে বর্ষা শুরুতেই তৈরী এই সড়কটি কয়েকদিনে মাথা ভেঙ্গে যায়। কয়েকটি স্থানের বৃষ্টি পানি জমে গর্ত হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নিয়ম না মেনে পাঁচটনের অধিক ট্রাক যোগে মালমাল সরবরাহ করার ফলে রাস্তা ডেবে যাওয়ার এখন চলাচলে বেহাল অবস্থা। সেই রাস্তা দিয়ে অনেকে মটরসাইকের যোগে চলাচল করতে গিয়ে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও শিকার হয়েছেন।
বটতলী গ্রামে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি তাদের কষ্ট কথা বলেন, বর্ষা শুরুতেই সড়কের কাজটি শুরু হয়েছিল সেটি এখন ভেঙে গেছে। রাস্তা মাঝখানে পানি জমিয়ে ছোট ছোট গর্ত তৈরি হয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল করতে বেগ পেতে হচ্ছে। কোনরকম সড়কটি পাশ দিয়ে যাতায়াত করে নিত্যদিনে কাজ সেড়ে নিচ্ছেন। পূর্বে সড়কটি সংস্কার আগেই এই রাস্তাটি ভালো মানে ছিল। উক্ত কাজের নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটি অর্ধেক কাজ করে ফেলে রেখে চলে গেছেন। এই থেকে পরিত্রাণ পেতে তাদের জোর দাবি কাজটি যেন খুব শিঘ্র শুরু করেন।
এইদিকে ঠিকাদার রতন কুমার মুঠোফোনে কথা বলেন, লকডাউন অর্ধেক কাজ করলেও বর্ষাকালে জন্য সড়কটি কাজ বন্ধ করতে বলেছেন এলজিইডি। বর্তমানে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভৌগান্তি ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে দ্বিধাবোধ করে এড়িয়ে যান।
আরেকজন শেয়ারদার ঠিকাদার মোঃ মোজ্জাফর তিনি বলেন, কাজ আপাতত বন্ধ আছে। মনে হয় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে। পরবর্তীতে কাজ শুরু করলে রাস্তাটি আয়না মত করে দেবো। নিউজ কেন করবেন, নিউজ করলে আমাদের জন্য ক্ষতি হয়। অনেক সমস্যা সৃস্টি হতে পারে। প্রয়োজনে আমার দেখা করেন বলে ফোন কেটে দেন।
রাস্তার কাজের অনিয়মের ব্যাপারে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলার এলজিইডি সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বৃষ্টি কারণে কাজ আপাতত বন্ধ রেখেছি। কয়েকদিন আগেই রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। রাস্তার প্রায় বৃষ্টি সময়েও গাড়ি যাতায়াতে কারণে খানাখন্দ হয়েছে। যেগুলো ভেঙ্গে গেছে সেগুলো পুনরায় ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে অবহিত করেছি।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..