ওয়াকিল আহমেদ
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ২০১৯ সালে ২৮ জানুয়ারি যখন ঢাকার চারপাশে নদী দখল উচ্ছেদ শুরু করলাম তখন কার দখলে ছিল তা বিবেচনা করিনি। প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জগুলো বলেছিলাম। তখন তিনি আমাদের সাহস দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে এমন একজন নেতাকে পেয়েছি যার সাহস আমাদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগায়। তার সাহস অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্ত করেছি। সেগুলোকে রক্ষা করতে কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করছি।
রোববার রাজধানীর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল মিলনায়তনে ‘মুজিব শতবর্ষ ও বিশ্ব নদী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর নদী ও পরিবেশ ভাবনা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আয়োজিত সেমিনারে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীকেন্দ্রিক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে তাকে সময় দেওয়া হয়নি। পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিরুদ্ধে অপবাদ ও অপপ্রচার করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ সমাজ ব্যবস্থা, লুটেরা সমাজ ব্যবস্থা তৈরি করা করেছে। এ জায়গা থেকে আমাদের নদীগুলোও রক্ষা পায় নেই। পঁচাত্তর পরবর্তী দূষিত সমাজ ব্যবস্থার কারণে নদীগুলোও দখল ও দূষণের কবলে পড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যখন পুরো সমাজ ব্যবস্থা দুর্নীতিবাজ, লুটেরা স্বভাবের হয় তখন সেখানে ভালো কিছু থাকে না। দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের রোধ করে বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে নদী রক্ষার জন্য আমাদের আজ সংগ্রাম করতে হতো না। নদীর প্রবাহ ঠিক থাকতো। নদীগুলো দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকার উৎস হিসেবে কাজ করতো।
নদী দখলমুক্ত করতে গিয়ে সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, পচাঁত্তরের পর একটি ধারা তৈরি হয়, মানুষ মনে করেছিল অপরাধ করলে বিচার হবে না। নদী দখল করলে বিচার হবে না। অনেকে নদীর পাড়ে গিয়ে ঘর তুলেছে, অনেকে নদীর পাড়ে কলকারখানা গড়ে তুলেছে। তারা মনে করেছে এটা দখল নয়, এটা আমার প্রাপ্য অধিকার। এ মনে করে কিন্তু অনেকে নদীর পাড় দখল করেছে।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন অপরাধীদের হাতে ছিল। অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা দখলকারীর অপরাধীদের লালন করেছিল। এ দুরবস্থা শুধু নদীর নয়, পুরো বাংলাদেশকেও গ্রাস করেছিল।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের পরিচালক ইকরামুল হক, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ।