আব্দুর রাজ্জাক কাজল,
রেল যোগাযোগ বন্ধ দুই বছর
রাজারহাট-কুড়িগ্রাম রুটে প্রায় দুই বছর ধরে রমনা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ থাকলেও চালুর উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শতবর্ষ ধরে চলে আসা রমনা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় স্বল্প খরচে নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
কুড়িগ্রামের চিলমারী-রমনা থেকে রাজারহাট হয়ে লালমনিরহাট জেলা সদরের তিস্তা রেলস্টেশনের দূরত্ব ৫৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪৩ কিলোমিটার রেলপথ পড়েছে কুড়িগ্রাম জেলায়। ১৯২৮ সালের ২ আগস্ট রমনা-চিলমারী থেকে রেল যোগাযোগ শুরু হয়। যাত্রীদের সুবিধার্থে ওই সময় ৪৩ কিলোমিটারের মধ্যে ৮টি রেলস্টেশন স্থাপন করা হয়। এরপর রমনা-পার্বতীপুরে সকাল-সন্ধ্যায় দুটি এবং রমনা-লালমনিরহাট রেল সড়কে দুপুর ও রাতে দুটিসহ মোট চারটি ট্রেন চলাচল শুরু করে। ২০০২ সালে রমনা-পার্বতীপুরগামী একটি এবং রমনা-লালমনিরহাট রুটের দুটিসহ মোট তিনটি ট্রেন বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে শুধুমাত্র একটি রমনা লোকাল ট্রেন পার্বতীপুর থেকে রমনা এবং রমনা থেকে তিস্তা মোট চারবার যাতায়াত করত। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দুপুরে কুড়িগ্রামের চিলমারী, রমনা থেকে রাজারহাট হয়ে পার্বতীপুর অভিমুখে ছেড়ে যাওয়ার পর এক বছর আট মাসেও ফিরে আসেনি রমনা লোকাল ট্রেনটি। জানা যায়, কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে অন্যান্য ট্রেনের মতো রমনা ট্রেন যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে সারাদেশে বন্ধ থাকা অন্যান্য ট্রেন চালু হলেও অজ্ঞাত কারণে চালু হয়নি রমনা লোকাল ট্রেন। এই ট্রেনটি চালু থাকাকালে স্বল্প খরচে, সহজে এবং নিরাপদে কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে রাজারহাট উপজেলার ওপর দিয়ে রংপুর হয়ে পার্বতীপুর পর্যন্ত জনসাধারণ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করত। এ ছাড়া এ ট্রেনে অল্প খরচে পান-সুপারির চালানসহ বিভিন্ন পণ্য নিরাপদে একস্থান থেকে অন্যস্থানে পরিবহন করত। ফলে বর্তমানে সাধারণ ব্যবসায়ীসহ কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ২০ লাখ মানুষ সুবিধাবঞ্চিত।
রাজারহাট থেকে রমনা লোকাল ট্রেনে কুড়িগ্রাম, উলিপুর ও চিলমারীর নিয়মিত যাত্রী ছিলেন রিয়াজুল। তিনি জানান, ট্রেনটি চালু থাকাকালীন অল্প খরচে নিরাপদে গিয়ে কাজ সেরে দুপুরে ফিরতি ট্রেনে বাড়ি আসা যেত। এখন আমরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজছাত্র আরমান বলেন, আগে অল্প খরচে সকালের রমনা লোকাল ট্রেনে কুড়িগ্রাম গিয়ে কলেজের ক্লাস শেষে আবার দুপুরের ট্রেনে বাড়ি ফেরা যেত। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ জানান, চেষ্টায় আছি ট্রেনটি চালু করার। তবে কবে থেকে চালু হবে, তা তিনি বলতে পারেননি।