জুয়েল খাঁন,সিলেট জেলা প্রতিনিধি আগামী ২৪ তারিখ ঢাকা-সিলেট চারলেন মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান।জানা যায়, প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে সিলেটবাসীর স্বপ্নের সিলেট-ঢাকা ৬ লেন মহাসড়ক। এরমধ্যে এক দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ লেন মহাসড়কের কাজকে ১৩টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টিতে অংশের কাজ শুরু হচ্ছে। পর্যায় ক্রমে অন্য ৫টিরও কাজ শুরু হবে।২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেটের পীর হবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য হবে ২১০ কিলোমিটার। ছোট-বড় সেতু থাকবে ৭০টি। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস। বিদ্যমান মূল সড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন গতির যান চলাচলের জন্য আলাদা আলাদা সার্ভিস লেন থাকবে। সড়কে যান চলাচল করতে পারবে ৮০ কিলোমিটার গতিতে।এশীয় মহাসড়ক, বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। মহাসড়কের ১১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত অংশের উন্নয়ন হচ্ছে ভারতীয় ঋণ সহযোগিতায়। ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরব সেতু বাদ দেওয়া হয়েছে চলমান উন্নয়নের অংশ থেকে।মহাসড়কের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পুরো সিলেট অঞ্চল এবং মহাসড়ক পার্শ্ববর্তী অন্যান্য স্থানগুলো পর্যটন এবং শিল্পাঞ্চলগুলো জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে বলে ধারণা করছে সরকার।চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সিলেট-ঢাকা ৪ লেন মহাসড়ক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায় ১১ মার্চ। এ প্রকল্পে প্রাথমিক বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছিল ১৫ হাজার একশত ৩০ কোটি টাকা। পরবর্তীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় সিলেট-ঢাকা ৪ লেন মহাসড়ক প্রকল্প ৬ লেনে উন্নিত হয়। এবং এর সর্বশেষ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৩ হাজার কোটি টাকা। ৪ লেন সড়কের কজ ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ৬ লেনে উন্নিতকরণ ও করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকল্প সম্পাদনের সময় ২০২৬ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।উপ-আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে। এসব বিবেচনায় সিলেট-ঢাকা ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্পটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। জনগণের যোগাযোগ ভোগান্তি দূরীকরণের পাশাপাশি অথনৈতিক ভাবে লাভবানের বিষয়টি এ প্রকল্পে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।