রফিকুল ইসলাম বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে যশোরের শার্শা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আমন ধান সহ বিভিন্ন ফসলি জমি। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার শতশত কৃষকরা। নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে আমন ধান সহ বিভিন্ন রবিশস্য।
সরেজমিনে দেখা যায় ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে শার্শা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেতের ফসল। শত শত কৃষকের শেষ স্বপ্ন আমন ধান ডুবে রয়েছে পানিতে। রবি শস্য ও সবজি ক্ষেতের একই অবস্থা। কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও মাজা পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে কৃষকের সোনালী ফসল ধান।
শার্শা উপজেলার বেনাপোল পাশ্ববর্তী পুটখালী.গোগা.বালুন্ডা,নাভারনের পাশ্ববর্তী বুরুজ বাগান.মাটিপুকুর.কন্যাদহ, কাশিপুর সহ বাগআচড়ার বিভিন্ন নিম্ন এলাকার গ্রামঞ্চলের কাটা ধানসহ শত শত হেক্টর ধান, সরিষা, মসুর.আলু সহ সবজি ক্ষেতে জমে থাকা পানিতে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। শেষ সম্বল সহ এনজিওর ঋণের বোঝা নিয়ে ক্ষেতে টাকা ব্যয় করে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। এমন পরিস্থিতিতে গভীর চিন্তায় মাথায় হাত উঠেছে তাদের। রবি শস্য সহ ধানের ব্যাপক ক্ষতি কখনো পোষানো যাবেনা বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
কৃষকরা বলেন ডুবে যাওয়া এ সমস্ত আবাদি জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকা ও খালবিলে অবৈধভাবে ভেড়ীবাধের কারণে বৃষ্টির পর কিছুটা ধীর গতিতে পানি টানতে শুরু করেছে। পরিপূর্ণ পানি সরে যাওয়ার আগেই চাষিরা সর্বশান্ত হয়ে যাবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের পরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার গৌতম কুমার শীল বলেন চলতি বছরে এই উপজেলায় ২০ হাজার ৩৮০ হেক্টর ধান, ২ হাজার ৮৪০ হেক্টর সরিষা এবং ৮৩০ হেক্টর জমিতে মসুরের আবাদ হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সরিষা এবং মসূরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যা একজন কৃষকের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা সব সময় নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি। জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষযোগ্য ফসল করতে সার বীজসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করা হবে কৃষকদের।
ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে কৃষকের সৃষ্ট এ ক্ষতি পুষাবার নয়। কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে অতি দ্রুত প্রয়োজন সরকারের প্রণোদনা পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য কামনা করেছেন এ অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। সরকারের প্রনোদনা পেলে কৃষক উপকৃত হবে পাশাপাশি চাষাবাদে উৎসাহিত হবে।