তাহিরপুর প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জ দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাক্সগুয়ার হাওর পারে অর্থঙ্কটে বন্ধ রয়েছে এক হতদরিদ্র গ্রামের মসজিদের নির্মাণ কাজ ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের টাক্সগুয়ার হাওর সংলগ্ন জয়পুর গ্রামের জামে মসজিদটি গত তিন বছর ধরে,মসজিদের মাটি ভরাট সহ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন গ্রামবাসী।
জানা যায়, এই গ্রামের পূর্বের মসজিদটি গ্রামের মুসলিদের তুলনায় মসজিদটির প্রশস্ত খুবই কম, তাই সকল মুসল্লীরা এক সাথে জামায়াতে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়না। এ ছাড়াও মসজিদটি টাক্সগুয়ার হাওর ওয়াচ-টাওয়ার সংলগ্ন গ্রামে অবস্থান,যেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে টাক্সগুয়ার হাওরে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে আসেন হাজার হাজার পর্যটক।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এসে তারা মসজিদ সংলগ্ন আশপাশেই অবস্থান করেন। এবং তাদের মধ্যে অনেকেই জামাতের সাথে নামাজ আদায় করতে এই মসজিদে এসে বিড়ম্বনার শিকার হন।
এমতাবস্থায় গ্রামবাসীর নিজ উদ্যোগে সম্মিলিত আয়ের উৎস থেকে গত তিনবছর ধরে অর্থ সংগ্রহ করে নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন।
জানা যায়, গ্রামটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান। গ্রামে বসবাসরত হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী অতি উৎসাহ নিয়ে নিজ উদ্যোগে মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করলেও আর্থিক সঙ্কটের কারনে শুরুতেই মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ করতে দেশ বিদেশের সকল স্তরের মানুষের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন গ্রামবাসী।
হাওর পারের সন্তান শিক্ষার্থী ক্বারী মাওলানা শিহাবুদ্দীন (রয়েল) বলেন, মুসলমানদের দলবদ্ধভাবে নামাজ আদায়ের জন্য নির্মিত স্থাপনার নাম হচ্ছে মসজিদ। আর যদি কেউ আল্লাহর জন্য এই মসজিদ নির্মাণ করেন আল্লাহ তায়ালাও তার জন্য জান্নাতে অনুরুপ একটি স্থাপনা নির্মাণ করেন। যদি কেউ একা মসজিদ নির্মাণ করেন তার জন্য এই প্রতিদান। আর যদি কোন অংশ গ্রহণের মাধ্যমে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। সে জন্য নবী করিম (সাঃ)বলেছেন, যে ব্যাক্তি আলাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে পাখির বাসা পরিমাণ বা তার চেয়েও ছোট মসজিদ নির্মাণ করেন, আলাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রসাদ নির্মাণ করেন।
উনি আর বলেন, এর প্রেক্ষিতে ওলামায়ে কেরাম বলেনছেন যারাই মসজিদ নির্মাণে সওয়াবের নিয়তে অংশ গ্রহণ করবে,, প্রত্যেকেই নিজ পরিমান অনুযায়ী সওয়াব পাবে। সদকায়ে জারিয়ার এই মহান কাজে আপনিও শরীক হোন। হতে পারে কাল কিয়ামতে এই মসজিদ হবে আমাদের নাজাতের উপায়। জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম।
আল্লাহ পাক যেন আমাদের সবাইকে তাওফিক দেন,আমীন, হাওর সংলগ্ন জয়পুর জামে মসজিদের মতুয়াল্লি মোঃ নুরুল আমিন বলেন,বিগত চার-পাঁচ বছর ধরে গ্রামবাসীর সম্মিলিত আয়ের উৎস থেকে অর্থ সংগৃহীত করে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ পরিবার হতদরিদ্র শ্রমজীবী নিত্য আনে নিত্য খায় এমতাবস্থায় বর্তমান করোনা সংকটকালীন সময়ে আমরা সবাই কর্মহীন হয়ে যাওয়ায় কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। তাও আবার বন্যায় বাড়ি ভাঙন সহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি, যেমন মরার উপর কারার ঘাঁ।
বর্তমানে চৌবাচ্চা নিয়ে বেচে থাকাই কষ্ট হচ্ছে,মসজিদ নির্মাণের অর্থ ব্যয় করবো কিভাবে, তাই দেশ বিদেশের সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা কামনা করছি । এ ছাড়া, যে কোন প্রয়োজনে মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানান- জয়পুর জামে মসজিদের মতুয়াল্লি।