মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর বদলগাছীতে পিতার করা প্রতারনার মামলায় ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিধিরপুর (বদলগাছী সরকারি কলেজ পাড়া) গ্রামে। গ্রেপ্তারকৃত ছেলের নাম মোঃ শহিদুল ইসলাম (৫০)।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসামী শহিদুল ইসলামের মায়ের নামে পোস্ট অফিসে সঞ্চয় কৃত টাকা জমা রাখেন।নমিনি হিসেবে তার বৃদ্ধপিতা আব্দুর রহমান (৮০) ছিলেন।আসামীর মায়ের মৃত্যুর পর নমিনি হিসেবে তার পিতা মায়ের জমাকৃত ৮ লক্ষ টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে উত্তোলন করে নিজের আব্দুর রহমানের নামে রূপালী ব্যাংক লিঃ বদলগাছী শাখায় স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রাখার কথা বলে ছেলে সুকৌশলে তার নিজ একাউন্টে দুই কিস্তিতে জমা রাখে। লোকমুখে শুনে ব্যাংকে খোঁজ নিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় তার পিতার একাউন্টে কোনও টাকা জমা নেই। বাড়িতে ফিরে ছেলে শহিদুল ইসলামকে টাকার কথা বললে সে বলে টাকা তার একাউন্টে জমা আছে কয়েকদিন পর ফেরত দিবো বলে জানায়। তারপর টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে টালবাহানা করতে থাকলে তার বাবা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেনকে জানালে চেয়ারম্যান উভয়কে নিয়ে বসেন। ঘটনার আদ্যপান্ত জেনে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ৪ (চার লক্ষ) টাকা নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। মেয়াদ শেষে টাকা চাইতে গেলে শহিদুল টাকা দিবেনা মর্মে তার পিতাকে সাফ জানিয়ে দেয়।
এমতাবস্থায় মঙ্গলবার সকালে বৃদ্ধ পিতা আব্দুর রহমান নিজে থানায় উপস্থিত হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ করলে পুলিশ ছেলে শহিদুল ইসলামকে আটক করে।
বৃদ্ধ আব্দুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রীর নামে পোষ্ট অফিসে ৮ লাখ টাকা জমা রাখা ছিল। এর নমিনি ছিলাম আমি। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পর পোষ্ট অফিস থেকে সেই টাকা উত্তোলন করে রূপালী ব্যাংকে আমার একান্টে রাখার কথা বলে আমার ছেলে শহিদুল ইসলাম সুকৌশলে তার নিজ একাউন্টে জমা করে। বিষয়টি আমি জানতে পেরে শহিদুল ইসলামকে টাকার কথা বললে প্রথমে সে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে সে বলে সমুদয় টাকা তার নিজ একাউন্টে জমা আছে কয়েকদিন পর ফেরত দিবো বলে জানায়। তারপর টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে টালবাহানা করতে থাকলে আমি বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেনকে জানালে চেয়ারম্যান উভয়কে নিয়ে বসে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ৪ (চার লক্ষ) টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। সেখানে সাক্ষী হিসেবে চেয়ারমানের স্বাক্ষর রয়েছে। মেয়াদ শেষে টাকা চাইতে গেলে শহিদুল টাকা দিবেনা মর্মে সাফ জানিয়ে দেয়। উপায় না পেয়ে আমি বদলগাছী থানায় এজাহার দায়ের করি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি জানি, ষ্টাম্পে সব উল্লেখ আছে।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ আতিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন পিতা ছেলের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণা একটি মামলা দায়ের করেছেন। পিতার এজাহারের প্রেক্ষিতে শহিদুলকে আটক করা হয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..