1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ-এর অধ্যক্ষের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের নেপথ্যের কাহিনী, দেখার কেউ নেই
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন

রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ-এর অধ্যক্ষের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের নেপথ্যের কাহিনী, দেখার কেউ নেই

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ৫.০৯ পিএম
  • ২২৭ বার পঠিত

রংপুর ব্যুরো:

অর্থ আত্মসাৎ ও জীবন কৃষ্ণ রায়ের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে জেলা প্রশাসক, রংপুর-এর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও দীর্ঘ ২৫ দিনেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি রংপুর জেলা প্রশাসক। এর পরেও আগামী ২৭/০২/২০২৩ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর দীর্ঘদিন থেকেচ লছে অভিনব পন্থায় দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাতের মত ঘটনা। ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, রংপুর জেলা প্রশাসক।

নিয়োগ বাণিজ্য থেমে নেই অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনের। খন্ডকালীন শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ রায় ৩০/১০/২০১৮ তারিখে প্রভাষক আইসিটি নিয়োগের সময় একজন প্রার্থী ছিল চাকুরীপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার জন্য অধ্যক্ষের সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকার লেনদেনের সুনির্দিষ্ট অভিুেযাগ আছে।

এদিকে জীবন কৃষ্ণ রায় নিয়োগ পরীক্ষা এত কম নম্বর পেয়েছে নিয়োগ বোর্ডে অন্য সদস্যের মৌখিক পরীক্ষায় ৬/৭ নম্বর দিলেও অধ্যক্ষ ১৮ তে ১৮ নম্বর দিয়েও জীবন কৃষ্ণকে পাশ করাতে পারেনি। এদিকে লেনদেনকৃত টাকা যাতে ফেরত দিতে না হয় সেজন্য সহকারী প্রোগ্রামার পদ সৃষ্টি করে জীবন কৃষ্ণকে সেই পদে পদায়ন করার ব্যবস্থা করেন অধ্যক্ষ নিজে।

প্রতি বছরে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য একই পরীক্ষা একাধিকবার আয়োজন করেন, সেখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে অধ্যক্ষ ও তার অনুসারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ভাগবাটোয়া করে নেন।

এ ছাড়াও পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা পরিদর্শক এনামুল হক এবং অডিট অফিসার মো: মোকলেছুর রহমান ০৯/০৬/২০১৬ তারিখে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজটি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করেন। তাঁদের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বর্তমান অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর নিয়োগ অবৈধ মর্মে ০৯/১০/২০১৭ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে, অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর নিয়োগ বিধিসম্মত নয় হেতু এমপিওভুক্তির তারিখ হতে ৩১/০৩/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত উল্লেখিত বেতন-ভাতা বাবদ ১৩,৩৩,৮০০/-(তের লক্ষ তেত্রিশ হাজার আটশত) টাকা সরকারি খাতে ফেরতযোগ্য। এর পরে গৃহিত বেতন-ভাতাও ফেরতযোগ্য হবে। অথচ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন অবৈধভাবে তার দায়িত্বে থেকে এমপিওভুক্তির অর্থ অবৈধভাবে উত্তোলন তথা অতিরিক্ত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেই চলছেন। তিনি নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে গ্র্যাচুইটি নীতিমালা তৈয়ারি করেছেন অধ্যক্ষ নিজেই ।

নীতিমালা ৬ (ছ) নম্বর ধারায় শুধুমাত্র অধ্যক্ষের পূর্বে অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে, বিষয়টি উল্লেখ করেন। শুধু অধ্যক্ষের ক্ষেত্রে নিজস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তার পূর্বের চাকুরির সময়সীমাও পরিগণিত হবে। ০৩/১০/২০১৮ তারিখে পরিচালনা পর্ষদ-এর সভার রেজুলেশন ৫ সদস্যবিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি গঠন করা হলেও পরবর্তীতে ০১ (এক) জনকে বাদ দিয়ে ০৪ (চার) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে নিয়োগ প্রদান করেন। যাহা উক্ত নিয়োগবোর্ডের অবৈধতার প্রতিক।

 

উক্ত ৪ জনের মধ্যেও শাহ নেওয়াজ কবির সোহেল অবিভাবক প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেন নাই। অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কলেজের একজন প্রদর্শক দিলীপ রায় কে প্রদর্শক পদ থেকে প্রভাষক পদে পদোন্নতি প্রদান করেন। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

সঙ্গীত শিক্ষক লাভলী সরকারকে সর্বসাকুল্যে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা বেতন-ভাতা নির্ধারণপূর্বক নিয়োগ প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে অধ্যক্ষের ক্ষমতায় কোনরূপ পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ বিধি অমান্য করে লাভলী সরকারকে সহকারী শিক্ষক পদে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে।

অপরদিকে মাধ্যমিক শাখায় আইসিটি বিষয়ে একজন খÐকালীন শিক্ষক নিয়োগ-এর জন্য ১৮/০৫/২০১৭ তারিখে দৈনিক যুগের আলো পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডার প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে আবেদনে সংযুক্ত থাকলেও উক্ত ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডার-এর টাকা অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন প্রতিষ্ঠান তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন। যা আর্থিক দুর্নীতির সামিল বটে। ২০২০ এবং ২০২১ শিক্ষাবর্ষে করোনার কারণে অধ্যক্ষ রংপুরে অবস্থান না করিয়া, ঢাকায় অবস্থান করেন। উক্ত সময়ে অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন তার অনুগত ও মনগড়া শিক্ষক দ্বারা ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন নগদ (ব্যাংক ছাড়া) গ্রহণ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক শাখার একজন স্বনামধন্য ও সুপরিচিত সহকারী শিক্ষক চৌধুরী রওশন আরা (চায়না) ০২ (দুই) বছর আগে অবসরে গেলেও তার বিষয়ে কোন বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন পক্ষান্তরে উক্ত প্রতিষ্ঠানের তার মনোনীত একজন সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার অবসরে যাওয়ার আগেই ১১/১২/২০২১ তারিখে শিক্ষকদের নিকট থেকে ৬০০/- (ছয়শত) টাকা করে চাঁদা আদায় করে সেলিনা আক্তারের জমকালো বিদায় অনুষ্ঠান করেন, পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের তোপের মুখে পড়লে উক্ত টাকা শিক্ষকদের ফেরত প্রদান করেন প্রতিহিংসুক অধ্যক্ষ। প্রতি বছর এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার পাল্টাপাল্টি সেন্টার নিয়ে পরীক্ষা কক্ষে নকল সরবরাহ করে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেন ধুর্ত অধ্যক্ষ। ফলে যারা নকল সাপ্লাই দেয় না সেই শিক্ষকদের ডিউটি দেয়া হয় না।

উল্লেখ্য যে, অধ্যক্ষের ছেলে শাদমান এইচএসসি ২০১৯-এ পরীক্ষার্থী থাকায় প্রতিদিন ০৩ ঘন্টার স্থলে ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল মর্মে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ আয় যেমন: ভর্তি ফরম বিক্রি, ক্যালেন্ডার, স্কুল ডায়েরী, রেজিস্ট্রেশন, বিভিন্ন ফি গ্রহণ, বই কোম্পানী থেকে সালামী গ্রহণ, ইউনিফরম বানানোর নির্ধারিত/টেইলার্স থেকে প্রতিসেট ১০০/- টাকা হারে গ্রহণ। জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার কোচিং-এর লক্ষ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পরীক্ষাতে অধ্যক্ষ তার মনগড়া একই শিক্ষককে কমিটিতে বার বার রাখেন।

তৎকালীন জেলা প্রশাসক, রংপুর ও প্রতিষ্ঠান সভাপতি মহোদয় উপাধ্যক্ষ পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশ করেছেন ০৬/০৭/২০১৪ তারিখে। কিন্তু কিছুসংখ্যক আবেদন পাওয়ার পরও অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন তার ক্ষমতা বজায় রাখায় উপাধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নিয়োগ স্থগিত করেন। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন ০৩/০৬/২০১২ তারিখে কলেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করার পর ঐ বছরই এসএসসি পরীক্ষার্থী ৩২ জন ছাত্র-ছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের ফরম পূরণ বন্ধ করিয়া দিয়েছিলেন, অতপর; উক্ত ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকগণ অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর বিরুদ্ধে মিস আপিল ০২/২০১৩নং মামলা জেলা রংপুরের বিজ্ঞ ও দায়রা জজ আদালত-এ দায়ের করেন এবং আদালতের রায় এর মাধ্যমে এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষা ২০১৩ এর একদিন পূর্বে বোড এ ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তীর্ণ হয়। সেই সময় উক্ত অধ্যক্ষ অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন, এমনকি জনগণের এবং অভিভাবকগণের তোপের মুখে উক্ত অধ্যক্ষ পড়েছিলেন। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন মনগড়া এজেন্ডা তৈরি করে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সত্যকে, মিথ্যা বলে উপস্থাপন করেন এবং সুকৌশলে রেজুলেশন তৈরি করে রেজুলেশন পাস করিয়ে নিয়ে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করে চলছেন। প্রতিষ্ঠানে যুক্তিবিদ্যা, কম্পিউটার, আইসিটি বিষয়ে (খÐকালীন) শিক্ষক হিসেবে যথাক্রমে হুমায়রা কবির ও জীবন কৃষ্ণ রায়কে নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে পদ দুইটিতে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (ঘঞজঈঅ) কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগদান করার পরও কুচক্রী অধ্যক্ষ খÐকালীন শিক্ষকদের নিকট হতে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে হুমায়রা কবির ও জীবন কৃষ্ণ রায় কে প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছে। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ৫ম গ্রেডের বেতন ৪৩,০০০/- থেকে ৬৯,৮৫০/-টাকা থাকলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭৩,৩৪২/- স্কেলে বেতন গ্রহণ করছেন। ফলে প্রতি মাসে তিনি আনুমানিক ২০,৫৫৫/- টাকা করে অতিরিক্ত উত্তোলন করে চলছেন। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনের স্বামী একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব, যিনি মো: আবুল কালাম আজাদ। তার অবৈধ হস্তক্ষেপে জেলা পরিষদ আওতাধীন ডাক বাংলোটিতে চাকুরীকালীন সময় থেকে দখলপূর্বক বসবাস করছেন। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর দুর্নীতির চিত্র এত ব্যাপক যে তাহা এই সংক্ষিপ্ত সংবাদে বর্ণনা করা অসম্ভব।
অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির সুযোগ গ্রহণ করেছেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় উক্ত প্রতিষ্ঠান বাঁচানোর স্বার্থে এই মুহূর্তে উক্ত অধ্যক্ষকে অপসারণ অত্যাবশ্যক। এদিকে রংপুর জেলা প্রশাসক-এর সাথে কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews