কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলা শহরে মানুষ নৌ পথে যাতায়াতের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র বিচ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলাবাসী। কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ব্রহ্মপুত্র নদে আগামী জুন মাসে ফেরি চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র একটি প্রতিনিধি দল চিলমারী নদী বন্দর পরিদর্শন করেছেন।
ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির সদস্যদল চিলমারী নদী বন্দর এলাকা পরিদর্শন এবং সেখান থেকে ফেরি চালুর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
এসময় বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, রৌমারী থেকে জেলা শহরে যাতায়াতের জন্য ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য কয়েকটি ফেরি রুট রয়েছে। আমরা সবকয়েকটি নৌরুট পরিদর্শন করবো। এক্ষেত্রে নদীর গতিপথ, জনচাহিদা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের বারবার গতি পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই আমরা ফেরিঘাটের উপযুক্ততা নির্ধারণ করবো। যেহেতু চিলমারী নদী বন্দরকে ঘিরে সরকারের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে চিলমারী নদী বন্দরকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
চিলমারী-রৌমারী ফেরি ঘাট সম্ভাবতা যাচাই কমিটির সদস্যগণ চিলমারী নদী বন্দর পরিদর্শন শেষে ব্রহ্মপুত্র নৌপথে রৌমারী যান। সেখানে তাঁরা কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেনের সাথে দেখা করেন।
চিলমারী-রৌমারী ফেরিঘাট সম্ভাবতা পরিদর্শনে আসেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন এবং বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক(বাণিজ্য) এসএম আশিকুজ্জামান, জেনারেল ম্যানেজার মেরিন ক্যাপ্টেন হাসিমুর রহমান চৌধুরী, ম্যানেজার মেরিন আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইঞ্জিনিয়ার সাজিদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রব মন্ডল। এসময় তাদের সাথে ছিলেন চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান রোকুনুজ্জামান শাহীন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া কুড়িগ্রাম সফরে এসে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা পরিদর্শনে যান। সে সময় তার কাছে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর বিষয়ে স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। মুখ্য সচিব বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তার সফরসঙ্গী নৌ পরিবহন সচিব ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, চিলমারী থেকে ফেরি সার্ভিস চালু হলে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বিচ্ছিন্ন রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার মানুষ সহজে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়াও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার মানুষ এই ফেরি রুট ব্যবহার করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহজে যাতায়াত করতে পারবে।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন জানান, রৌমারী-রাজিবপুরের মানুষের জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কোন সড়কপথ নেই। প্রতি বছর তাঁরা ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াতের সময় নৌকা ডুবির স্বীকার হয়। তাঁদের দুঃখ লাঘবের জন্য ফেরি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী জুন মাসের মধ্যে এই ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।