আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সুদান থেকে ৭০০ বাংলাদেশি ফেরত আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ মে মঙ্গলবার বাংলাদেশিদের খার্তুমের উপকণ্ঠ থেকে বাসে করে ৮৫০ কিলোমিটার দূরে পোর্ট সুদানে নেওয়া হবে। সেখান থেকে সৌদি জাহাজ করে তাদের জেদ্দায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে। প্রক্রিয়াটি তদারকি করার জন্য পোর্ট সুদানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ এবং তার সহকর্মীরা অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার বিষয়ে এক বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, জেদ্দায় পৌঁছানোর পর বাংলাদেশিদের সাধারণ ফ্লাইটে করে ফেরত আনা হবে। যদি প্রয়োজন হয় চার্টার্ড ফ্লাইটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ বিমান এবং বিমান বাহিনী উভয়ই প্রস্তুত আছে।
তিনি জানান, আমরা যখনই পারি যতজনকে পারি নিয়ে আসবো। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বাংলাদেশি না হলে পাঠাবো না বিষয়টি সেরকম নয়। প্লেনের ব্যবস্থা সাপেক্ষে তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফেরত আনা হবে।
সৌদি আরব বাংলাদেশিদের ফেরত আনার জন্য জাহাজ দিচ্ছে এবং জেদ্দায় বাংলাদেশিদের থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলমান। গত দুই সপ্তাহে এ সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।
নিবন্ধনের আহ্বান
সুদানে প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, যারা এখনও ফেরত আসার জন্য নিবন্ধন করেননি, তাদের অনুরোধ করছি নিবন্ধন করার জন্য।
সুদানের পরিস্থিতি ভালো নয় এবং সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করা ঠিক হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সবাইকে নিরাপদে ফেরত আনার জন্য এবং সেই চেষ্টা করছি।
নিরাপদে বাংলাদেশিরা
এখন পর্যন্ত ৩৫জন বাংলাদেশি যারা সৌদি আরব বা অন্য দেশের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন তারা কোম্পানিগুলোর উদ্যোগে নিরাপদ জায়গায় রয়েছেন। শাহরিয়ার আলম জানান, এদের মধ্যে ৩৪ জন জেদ্দায় এবং একজন সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছেন।
সার্বিক নিরাপত্তা
বাংলাদেশিদের নিরাপদে ফেরত আনার জন্য বিবদমান দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সেটি সফল হয়নি। পররাষ্ট্র পতিমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সেটি করা সম্ভব হয়নি।
খার্তুমের উপকণ্ঠ যেখান থেকে বাস ছাড়বে সেই জায়গা পরিবর্তন করে অন্য জায়গা থেকে বাংলাদেশিদের বাসে ওঠানো সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আজ যে জায়গা নিরাপদ দুই দিন পরে সেটি নিরাপদ নাও থাকতে পারে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।
সুদানের হটলাইনে সংযোগ না পাওয়া প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে আমরা ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হতে বলেছিলাম। কিন্তু তার সংযোগ বারবার বিঘ্নিত হচ্ছিল। এক্ষেত্রে যারা সংযোগ পাচ্ছেন না তারা যেন তাদের ফোন নম্বরসহ একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে রাখেন।