আলতাফ হোসেন অমি
গত ৪ঠা মে ২০২৩ ইং তারিখে ঢাকার দারুসসালাম বাগবাড়ি ঋষিপাড়া এলাকায় স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে দারুস সালাম থানায় মামলা হয়। উক্ত মামলায় একটি স্বার্থন্বেষী মহল রাজনীতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে দারুস সালাম থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসলামকে ফাঁসানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। আর এতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন মিরপুরের কথিত সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদাউস শাহীন ওরফে জিএফ শাহীন। বিষয়টি নিয়ে গত ৮-ই মে রোজ সোমবার তার নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গত ৪ ঠা মে রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকার বাগবাড়ি ঋষি পাড়ার মন্দির এলাকায় স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি ঘটনা ঘটে এবং এতে উভয়ের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়। উক্ত ঘটনায় উভয় উভয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু ওই অভিযোগে একটি স্বার্থন্বেষী মহল দারুসসালাম থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইসলামের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে, একজন সাংবাদিক নামধারী এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, মহিলা ব্ল্যাকমেইলারকে সাথে নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ও তার নামসর্বস্ব পত্রিকায় তার নামে মিথ্যা-বানোয়াট অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এর প্রতিবাদে গত ৮-ই মে রোজ সোমবার দুপুর ১২ টায় জনাব ইসলাম তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন । জনব ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আমি ছোট থেকে এ এলাকায় বড় হয়েছি, এই এলাকার ছোট-বড় ধনী-গরীব সকলের কাছাকাছি আমি গিয়েছি, প্রত্যেকে আমাকে চিনেন, জানেন এবং আমাকে খুব ভালবাসেন। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের, দারুস্ সালাম থানার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে সুনাম ও সফলতার সাথে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছি।
গত বিএনপি জামায়েত জোট সরকারের আমলে রাজপথে থেকে আমাদের প্রায়ত এমপি জনাব আসলামুল হক ও বর্তমান এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আগা খান মিন্টুর নির্দেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরাসরি অংশ নিয়েছি। ওয়ান ইলেভেনের কঠিন সময়ে রাজপথে থেকে দলের সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। গত ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮ ইং সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে মাঠে থেকে নির্বাচনের সকল কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। ২০১৯ ইং সালের করোনা মহামরিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমার দারুস সালাম এলাকার, প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে দলীয় উপহার সামগ্রী মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এলাকার দিনমজুর থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ও উচ্চবৃত্ত ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে দলীয় সকল কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি। তাই এলাকার ছোট-বড়,ধনী-গরীব, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ আমার কাছে আপন, সবাই আমাকে ভালবাসেন এবং আমার সিনিয়র ও কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নেতারা আমাকে কাছে টেনে নিচ্ছেন। তাই আমার এই রাজনৈতিক সফলতা ও জনপ্রিয় দেখে ঈর্ষাণিত হয়ে দলীয় পদ বঞ্চিতরা আমাকে মানসিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে নানা রকম অপকৌশল করছেন।
আর এতে প্রত্যক্ষ মদদ যোগাচ্ছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি ও চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত ইমরান মতি, ফুটকা মুরাদ ও বাকা জসিম এর মত লোকেরা। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে তাদের একান্ত সহযোগী সাংবাদিকতার মত মহান পেশার নাম ভাঙ্গানো লেডি চাঁদাবাজ নামে খ্যাত, ব্ল্যাকমেইলার, দেহব্যবসায় মামলায় শাহআলী থানায় আটককৃত ও মানব পাচার-অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জান্নাতুল ফেরদাউস শাহীন ওরফে জিএফ শাহীন, তার নাম সর্বস্ব পত্রিকায় আমার নাম উল্লেখ করে ও এডিট করা কিছু ছবি দিয়ে ভুয়া, মিথ্যা, বানোয়াট গল্প রচনা করে সংবাদ পরিবেশন করে আসছে এবং তার ফেসবুক আইডিতে আমার নামে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। মোহাম্মদ ইসলাম সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
মারামারির ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলাম বলেন…..
ঘটনার দিন আমি এলাকাতে ছিলাম না, আমি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ঐদিন রাত আনুমানিক দুইটার সময় যখন জানতে পারলাম আমার নাম যুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তখন আমি কর্তব্যরত অফিসারের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই এবং তিনি আমাকে জানান যে, উপরোক্ত ব্যক্তিদের চাপে আপনার নাম যুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমি ওনাকে আমার অসুস্থতার কথা জানালে, উনি তদন্ত করে আমার সম্পৃক্ততা না পেলে আমার নাম বাদ দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। আল্লাহর রহমতে কুৎসা রটনাকারীদের শত চেষ্টা করা সত্বেও সত্যের জয় হয়েছে! উক্ত ঘটনায় আমার কোন রূপ সম্পৃক্ততা ও যোগ- সাজেশ পাওয়া যায়নি এবং উক্ত অভিযোগ থেকে আমার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে! এতে করে দারুস সালাম থানা কর্তৃপক্ষকে আমি ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
জিএফ শাহীন সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন…….
সে কোন যোগ্যতার বলে সাংবাদিকতা পেশায় আসলো এটাই হলো আমাদের কাছে বড় প্রশ্ন? কিছুদিন আগেও সে তার বড় ভাই-ভাবির সাথে আমার বাড়ির পাশে একটা ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করত এবং মাঝেমধ্যেই অভাব-অনটনের কথা বলে আমার কাছ থেকে সাহায্য নিত। আমি এলাকার অভাবী মানুষ ভেবে তাকে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করেছি কিন্তু সেই সাহায্য আজ আমার কাছে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে অতি লোভে পড়ে আমার কাছ থেকে নানা বাহানায় টাকা ভাগিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছিল। আমি সেটা বুঝতে পেরে তাকে এড়িয়ে চলা শুরু করলে, সে আমার প্রতিপক্ষ পদ বঞ্চিতদের হাতে হাত মিলিয়ে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা শুরু করে। ইতিপূর্বে সে আমার এক সিনিয়র রাজনৈতিক নেতার নামে বিভিন্ন রকম বানোয়াট কুৎসা রটনা করে মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নেয়। এছাড়া সে বিভিন্ন ধনর্ঢ্য ব্যক্তিকে কৌশলে তার সহযোগী শিউলি ও ফুটকা মুরাদদের সহায়তায় সম্পর্ক তৈরি করে, তাদের বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে তাদের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়।
এছাড়াও সে মাদক ব্যবসা, দেহ ব্যবসা ও মানব পাচারের মত ঘৃণ্য অপরাধের সাথে যুক্ত, আমার জানামতে তার কোন একাডেমিক সার্টিফিকেট নেই তারপরেও সে কিসের বলে সাংবাদিকতার মত মহৎ পেশায় যুক্ত হলো তা আমার বোধগম্য নয়। আমি তার সম্পাদকের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, আপনি তার বিষয়ে খোঁজখবর নিন,তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখেন তারপরে আপনার পত্রিকায় তাকে সম্পৃক্ত করেন। অন্যথায় এই বিতর্কিত মাদক ব্যবসায়ী, সমকামিতায় যুক্ত মহিলার জন্য আপনার ও আপনার পত্রিকার বদনাম হবে। আমার নাম যুক্ত করে সে যে পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করেছে সে অথবা ওই পত্রিকা কর্তৃপক্ষ একবারো আমার কাছে উক্ত ঘটনা সাথে আমার সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা জানতে চায়নি। শুধুমাত্র শাহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে।
ইসলাম আরও বলেন,আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ কর্মী, আমি আমাদের স্থানীয় এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু মহোদয়ের অনুগত। আমি আপনাদের মাধ্যমে আমার নেতাদের অনুরোধ করবো, প্রয়োজনে উনারা আমার কর্মকাণ্ড বিষয়ে অনুসন্ধান করুক, আমি কোনরকম অন্যায় কাজে যুক্ত থাকলে আমার বিরুদ্ধে দলীয় বিধান মতে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো, আপনারা আমার এলাকায় আমার বিষয়ে খোঁজখবর নিন। আমি যদি কোনরকম অপরাধের সাথে যুক্ত থেকে থাকি তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে আমার বিরুদ্ধে আইনাঅনুক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এছাড়া আপনারাও যে সকল সাংবাদিক ভাই-বোনেরা উপস্থিত আছেন তারা আমার এলাকায় খোঁজ নিন, আমি যদি কোনরূপ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকে থাকি,তাহলে আপনারা আপনাদের পত্রিকার/টেলিভিশনের মাধ্যমে জাতির কাছে আমার মুখোশ উন্মোচন করুন। অন্যথায় যে বা যারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত তাদের হীন উদ্দেশ্য জাতির কাছে তুলে ধরার অনুরোধ করছি।
এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আপনি আইনি পদক্ষেপ নিবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব ইসলাম জানান, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, অবশ্যই আমি এই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনের যে যে ধাপ আছে তার সবগুলোর দারস্ত হব, কারণ আইন সবার জন্য সমান। আমি ইতিমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও মানহানি আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এছাড়া এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, জনাব ইসলাম এলাকায় রাজনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে খুব জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি এলাকার সকল মানুষের বিপদে-আপদে সবার আগে এগিয়ে আসেন এবং সুস্থ ধারার রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে দল-মত নির্বিশেষে সকলের কাছে প্রিয় একজন ব্যক্তি। এ বিষয়ে তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছ থেকে তার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, ইসলাম ভাই অনেক পরিশ্রম করে আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। তিনি কর্মী বান্ধব একজন নেতা। দলীয় নেতা কর্মীদের তিনি নিজের সন্তানের মত আগলে রাখেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালয় করার লক্ষ্যে দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে দলীয় সকল কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেন। এজন্য দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তাকে অনেক ভালোবাসেন। তাই দল-কানা কিছু কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অপপ্রচারে লিপ্ত থাকেন, গত কিছুদিনের ঘটনা তার ধারাবাহিকতার প্রমাণ মাত্র। এছাড়াও এলাকার দিনমজুর থেকে শুরু করে পান দোকানদার, রিক্সা-ভ্যানচালক, ফল বিক্রেতা,শরবত বিক্রেতা সহ সাধারণ মানুষের কাছে ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, ইসলাম ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি সুখে-দুখে বিভিন্ন সময়ে আমাদের পাশে থেকেছেন এখনো আছেন ভবিষ্যৎ থাকবেন। তার কোন কর্মকাণ্ড আমাদের কাছে অন্যায় মনে হয়নি। তিনি সৎ নিষ্ঠাবান এবং পরপোকারী জনদরদি নেতা। আমরা তার পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।