আবুল হাশেম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রধানঃ
রাজশাহীতে কর্মরত সিরাজুল ইসলাম রনি নামে ফটো সাংবাদিককে হয়রানীমুলক আটক করে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তানোর থানায় কর্মরত এসআই পলাশের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে পুলিশ সদস্যর বিচার চেয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে ৪২বছর পুরনো সংগঠন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগীয় কমিটি।
গতকাল ১২ই জুলাই বেলা ২টার সময় সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা রাজশাহী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এর কাছে এই অভিযোগ পত্র জমাদেন। তিনি অতি দ্রুত সময়ে তদন্ত পূর্বক সাংবাদিক নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। নির্যাতিত সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম রনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকা ও সংবাদ ২৪ঘন্টা অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ফটো সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত আছেন।
জানা যায়,ফটো সাংবাদিক মো: সিরাজুল ইসলাম রনি গত ১১ইজুলাই অফিসের কার্যক্রম শেষে রাত্রি ১২টার সময় তানোর গোল্লাপাড়া বাজার শশুর বাড়ি যাওয়ার সময় রাত্রি ১২টা ৩০মিনিটে তানোর হাড়দহ যাত্রী ছাওনির সামনে পৌছালে ফটো সাংবাদিক রনির মোটর সাইকেল এর গতি রোধ করে তানোর থানার সে সময়ে ওই এলাকায় কর্তব্যরত এসআই পলাশসহ পুলিশ সদস্যরা।
সাথে অবৈধ্য মাদক আছে বলে রনিকেসহ তার মটর সাইকেলে থাকা ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে। তল্লাশি করার সময় রনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সাথে সাথে তাকে অকথ্য ভাষায় তার মা/বাপ তুলে গালি গালাজ করে এসআই পলাশ। এমনকি সাংবাদিকের পরিচয়পত্র নিয়ে কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করেন তিনি। কেন গালিগালাজ করছে জিঙ্গাসা করলে এস আই পলাশ রনিকে চর থাপ্পর ও হাতে থাকা লাঠিদিয়ে বেধর মারতে থাকে আর বলে মোটর সাইকেলে লাল নিল লাইট কেন ? খোল এখনই। পাশে থাকা এক পুলিশ সদস্য মোবাইলে ভিডিও করছিস শালা বলে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে আবারো মারধর করে।
এবিষয়ে গত ১২ই জুলাই বেলা ১২টার সময় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দরা জরুরী সভা করে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর তানোর থানার এসআই পলাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।
পুলিশের নির্যাতনের স্বীকার ফটো সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন,আমার শশুর বাড়ি তানোর। এছাড়াও আমার স্ত্রী তানোর “আকচা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে” চাকরি করে। সেই সুবাদে প্রতিনিয়ত রাজশাহীতে পত্রিকা অফিসের কাজ শেষ করে তানোর যাওয়া আসা করি। হটাৎ গত ১১ই জুলাই সম্ভাবত রাত্রি ১২টা ৩০মিনিট তানোর হাড়দহ যাত্রী ছাওনির সামনে পৌছালে সেখানে দায়িত্বরত তানোর থানা পুলিশ আমার মটরসাইকেলের গতি রোধ করে পুরো গাড়ি ও আমাকে তল্লাশি করে। এ সময় আমি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সাথে সাথে এআই পলাশ ক্ষেপে যান আমার ওপরে। শুরু করেন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। কেন আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন এমন প্রশ্ন করতেই আমাকে চর/থাপ্পরসহ তার হতে থাকা লাঠি দিয়ে পিঠ ও মাথায় আঘাত করতে থাকে এসআই পলাশ। আমি এই পুলিশ সদস্যর বিচার কামনা করছি।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মো: নুরে ইসলাম মিলন বলেন,রাজপথে বিক্ষোভ-মিছিল আর আন্দোলন-সংগ্রামের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক এবং দায়িত্বরত পুলিশকে একই কাতারে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। অপরাধ ও অপরাধীর খবর জানতেও প্রতিনিয়ত পুলিশের শরণাপন্ন হতে হয় সংবাদকর্মীদের। অথচ এই পুলিশের হাতেই প্রতিনিয়ত নির্যাতন,লাঞ্ছনা আর নাজেহাল হতে হচ্ছে দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই সাথে রাজশাহী জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন বিপিএম ( বার) মহোদয়ের বিচারের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল। আমাদের বিশ্বাস তিনি এই পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী বলেন,নির্যাতক পুলিশের শাস্তি না হলে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হবে না। এ জন্য নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক এবং তার
আইনজীবীকে সাহস করে বিচারকের কাছে বলতে হবে যে,তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হলে সেটা বিচারকের কাছে তুলে ধরতে হবে। নইলে পুলিশের হয়রানি ও প্রতিহিংসা বন্ধ করা কঠিন।