তুষার দাশ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
মিরসরাইয়ের সাংবাদিক আশরাফের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রথমবার হামলার পর থানায় আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় দুই দফায় থানার ভেতরেও প্রবেশ করে হামলার চেষ্টা চালায়। এছাড়া থানার ভেতরে পুলিশের সামনে জবাইকরে হত্যার হুমকিদেয় সন্ত্রাসীরা। এতো কিছুর পরেও রহস্যজনক কারনে নীরব ভূমিকা পালন করে থানা পুলিশ।
শুক্রবার ১১ আগষ্ট বিকাল সাড়ে ৫ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সাংবাদিক আশরাফ ডান হাতের কব্জি কপাল ও ডান পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হন।
সাংবাদিক আশরাফের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মিরসরাইয়ের মোটরসাইকেল, সিএনজি, লেগুনা ও গরু চোর চক্রের সদস্য ও মাদক কারবারী মেহেরাজ চৌধুরী অনি ২০২২ সালে মোটরসাইকেল চুরি করে হাটহাজারী থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে তার ছবি দিয়ে সংবাদ প্রচার করেন। অনি জেল থেকে জামিনে এসে তার চোর চক্রের সদস্যদের নিয়ে সাংবাদিক আশরাফের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরণ করে ও ভবিষ্যতে এধরণের সংবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয়। এব্যাপারে মিরসরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন সাংবাদিক আশরাফ। পরবর্তীতে অনির মামা ১২ নাং খৈয়াছড়া ইউনিয়নের দুই বারের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার বাংলোয় নিয়ে মদ ও নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে ভিবিন্নজনকে বলেৎকারের নিউজ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহেদ ইকবালের ভাগিনা অনি ও তার চোরক্রের সদস্যরা শুক্রবার বিকালে সাংবাদিক আশরাফ তার বাসা থেকে মিরসরাই বাজারে যাওয়ার পথে পূর্বথেকে ওৎ পেতে থেকে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা থেকে আত্মরক্ষা করে সাংবাদিক আশরাফ মিরসরাই থানায় ডিউটি অফিসারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে পুলিশের সহায়তা চান। কিন্তু পুলিশ সাংবাদিক আশরাফকে থানার বাইরে গিয়ে একটি অভিযোগ লিখে আনতে বলেন। এসময় সাংবাদিক আশরাফ ডিউটি অফিসরের কক্ষ থেকে বের হতেগেলে থানার বাইরে অবস্থান নেয়া ৫০ থেকে ৬০ জন তাকে পুনরায় ধাওয়া করে। এসময় তিনি আবার থানা অবস্থান নিলে ছাত্র নেতা পরিচয়ে কয়েকজন মিলে থানার ভেতরে প্রবেশ করে সাংবাদদিক আশরাফের উপর পুনরায় হামলা চালানোর চেষ্টাকরে।
পরবর্তীতে রাত ৮ টায় টহল পুলিশের এসআই মোরশেদ থানায় প্রবেশ করে সাংবাদিক আশরাফ ও চোর চক্রের সদস্যদের কাছে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে এসআই মোরশেদ সহ উপস্থিত পুলিশ অফিসার ও সদস্যদের সামনে সাংবাদিক আশরাফকে জবাই করে হত্যার হুমকি দেয় অনির মামা ও জাহেদ ইকবাল চেয়ারম্যানের ভাই আবেদ ইকবাল। পরবর্তীতে ওসি কবির হোসেন রাত ৯টায় থানায় প্রবেশ করলে চোর চক্রের ১৫ সদস্য নিজেদেরকে ছাত্রনেতা পরিচয় দিয়ে তার অফিসে প্রবেশ করে উল্টো সাংবাদিক আশরাফে ব্যাপারে ব্যাবস্থা নিতে আলটিমেটাম দিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ওসি কবির হোসেন সাংবাদিক আশরাফের উপর হামলা ও জবাই করার হুমকির ভিডিও দেখে চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের ভাই আবেদ ইকবালকে ধমকদেন এবং সাংবাদিক আশরাফের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। এসময় তিনি সাংবাদিক আশরাফকে আশ্বাসদেন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনি ব্যাবস্থা নিবেন।
কিন্তু সাংবাদিক আশরাফ জানান, হামলাকারীরা রাস্তার হামলা করার পর থানায় গিয়ে পুলিশের সামনে দুইবার হামলার চেষ্টা করে এবং পুলিশের সামনে জবাইকরে হত্যার হুমকি দেয়ার পরও তাদেরকে আটকের ব্যাবস্থা না করে নির্বিগ্নে থানা ত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই উপযুক্ত বিচার পাওয়ার শঙ্কায় আছি এবং জিবন ঝুকিপূর্ণ মনে করছি।
মিরসরাই থানা অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন জানান, সাংবাদিক আশরাফের উপর হামলার ঘটনায় তার লিখিত অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে থানা পুলিশ কাজ করছে।