আবুল হাশেম, রাজশাহী
জাতীয় শোক দিবস – ২০২৩ উপলক্ষ্যে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আয়োজনে শোক সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ মন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা সাবেক এমপি ও সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী-লীগ, রাজশাহী জেলা শাখা।
২৫ আগস্ট (শুক্রবার বিকাল ৩ টা) বাঘা উপজেলার আড়ানী মনমোহিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে এই সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাসন মাহমুদ বলেন,১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কালরাতে ঘাতকের হাতে নিহত হন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রীসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিজ বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঘাতকরা হত্যা করেছিল, সে সব শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা জানায়।
তিনি বলেন, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর শুধু বাংলাদেশ রচনা করে জাননি তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন উন্নত সমৃদ্ধশালী একটি রাষ্ট্র গঠন করতে। তিনি যখন দেশ পরিচালনা করার দায়িত্ব পান তখন বাংলাদেশ ছিল একটি বিধ্বস্ত জনপদ। এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। আরো এক কোটি মানুষ অভ্যন্তরের বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এই বিশাল জনপদকে পূনর্বাসিত করেছিলেন। বাংলাদেশেকে পূর্নঃগঠিত করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৯.৫৪ শতাংশ আজ ৫২ পরেও আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮. ০২ শতাংশ।
তিনি বলেন, আজকে আমরা মালোশিয়া, সিঙ্গাপুর,দক্ষিণ কোরিয়ার বদলে যাওয়ার গল্প শুনি। কিন্তু ১৯৭৫ সালে এই সব দেশ আমাদের থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। তারা এখন উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে এর কারন বঙ্গবন্ধুর হত্যা কান্ড আর এই হত্যা কান্ডের প্রধান খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান। খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নিযুক্ত করেন।
দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের কানাদৃষ্টির কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু পার হয়ে ওপারে গিয়ে ফখরুল সাহেব বলেন, দেশে কোনো উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেন, বিএনপি বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়। আমরা জঙ্গি ধরি, ওরা বলে দেশে জঙ্গি নেই। এই অপরাজনীতি না থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যেত।
বিএনপির জনসম্পৃক্ত নেই জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি মানুষের কাছে যায় না। তারা অ্যাম্বাসিতে যায়। এখন তো দপ করে নিভে গেছে। যারা অপরাজনীতি করে, তাদের সঙ্গে কেউ থাকতে পারে না। এ জন্য বিএনপির আজকের এই অবস্থা। তিনি বলেন, বিএনপি কালো পতাকা মিছিলের আয়োজন করেছিল কিন্তু দেশের মানুষ ইতিমধ্যেই তাদের লাল পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে।
তিনি জনসভায় উপস্থিত সকলকে নৌকায় ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবার দেশ পরিচালনার মধ্য দিয়ে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী হিসাবে গড়ে তোলার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানায়।
উক্ত সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আওয়ামী লীগের এই ১৪ বছরে দলটি বাংলাদেশকে একটি দূর্বল অর্থনৈতিক দেশ থেকে সব শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে মানুষের জীবনমানকে উন্নত করতে হয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, জনগণের আস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকরাকেই দেশের মানুষ বেছে নেবে বলে আমি মনে করি।
উক্ত সভায়, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক,আশরাফুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব বেগম আখতার জাহান সদস্য বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটি, আলহাজ্ব মোঃ ফারুক চৌধুরি এমপি, আয়েন উদ্দিন এমপি, আদিবা আঞ্জুম মিতা এমপি। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আরও ছিলেন বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।