নওগাঁর বদলগাছীতে বিয়ের দাবীতে মুসলিম যুবকের বাড়ীতে অনশন করছে হিন্দু তরুণী কনিকা রানী (২৮)। প্রেমিকা বাড়ীতে আসার খবর পেয়ে বাড়ীর দরজায় তালা দিয়ে উধাও প্রেমিক আব্দুল মুমিন(৩৩)। ঘটনাটি ঘটেছে বদলগাছীর কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামে।
অনশনরত ভূক্তভোগী তরুণী কনিকা রানী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানায় বাড়ী এবং অভিযুক্ত প্রেমিক আব্দুল মুমিন বদলগাছীর কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে।
সরেজমিনে ২৫শে অক্টোবর বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তালাবদ্ধ অবস্থায় মুমিনের বাড়ীর দরজার গলিতে ভূক্তভোগী তরুণী কনিকা রানী দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিয়ের দাবীতে মেয়ের অনশনের কথা শুনে আশেপাশের গ্রামের নারীপুরুষ দেখতে আসছে দলে দলে।
অনশনরত ভূক্তভোগী তরুণী কনিকা রানী জানান, বিগত ৩ বছর পূর্বে ঢাকায় চাকরির সুবাদে প্রেমিক আব্দুল মুমিনের সাথে পরিচয় হয়। এক সাথে চাকরির সুবাদে আব্দুল মুমিন আমাকে প্রেমের এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়ের প্রলোভনে প্রায় ৩ বছর এক সাথে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বসবাসও করতেন বলে জানান। তাদের এই সম্পর্ক মুমিনের মা,ভাই, ভাবী সহ মুমিনের বোনও জানে। গত ২০দিন হতে কোন যোগাযোগ না থাকায় আজ বুধবার ২৫শে অক্টোবর সকালে মুমিনের বাড়ীতে আসি। আসার আগেই মুমিন বাড়ীর দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। ইতিপূর্বে মুমিনের বাড়ীতেও ২বার এসেছি, প্রতি বার ৩দিন করে বাড়ীতে অবস্থান করেছি। কিন্তু বাড়ীর বাহিরে বের হতে দেয়নি। পিছনে গোয়ালঘরের দরজা দিয়ে যাতায়াত করতাম।
ভূক্তভোগী তরুণী কনিকা রানী আরও জানান, তিন বছর ধরে সমস্ত বেতন উত্তোলন করে মুমিনকে দিয়েছি। এখন বিয়ের কথা বললে মুমিন বলে, ৫ লাখ নয়তো ২লাখ টাকা নিয়ে আসো বিয়ে করবো। মুমিন আমাকে যদি বিবাহ না করে আমার আর মরা ছাড়া কোন পথ খোলা থাকবে না।
স্থানীয়রা বলেন, সকালে এই মেয়ে আসার সংবাদ পেয়ে মুমিন আত্মগোপন করে। মুমিনের সাথে মুমিনের মা দরজায় তালাবদ্ধ করে চলে গেছে। দীর্ঘ সময় পার হলেও মুমিনের পরিবারের কেউ আসেনি।পার্শবর্তী এক প্রতিবেশি অনশনরত তরুণীকে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। স্থানীয়রা আরও জানায়, একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে বিয়ের জন্য এসেছে। আমরা চাই মুমিন এসে এই মেয়েকে মুসলিম ধর্ম মতে বিবাহ করুক।
এবিষয়ে আব্দুল মুমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন টি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যপারে কোলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর ইসলাম স্বপন বলেন, সকালে কনিকা রানী নামে ভূক্তভোগী তরুণী আমাকে মুমিনের সাথে তরুণীর সম্পর্ক বিষয়টি জানায়। আমি মুমিন এবং তার পরিবারকে বিষয়টি সমাধানের জন্য খবর পাঠালে মুমিন ও তার পরিবারের কেউ আসেনি। পরবর্তীতে ভূক্তভোগী তরুণী পরিষদ থেকে চলে যায়।
এ ব্যপারে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান বলেন, এ ব্যপারে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।