চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল হক সুমন এর বাড়িতে হামলা ও ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব এর নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর,ভয়ভীতি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৫ টায় সাতকানিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব এর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব এর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ৯নং পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সন্ত্রাসের শিকার ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে আমরা দেখা করেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি । আমাদের সাথে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ছিলেন। আপনারা ঘটনার ফুটেজ ও স্থানীয় অধিবাসীদের মতামত গ্রহণ করেছেন। সন্দেহাতীত ভাবে আমরা বলতে পারি,এই ঘটনার সাথে চট্টগ্রাম ১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সংসদীয় আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা নদভীর প্রত্যক্ষ নির্দেশ,মদদ ও উৎসাহ রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত বলে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলো রিয়াদ,মহিম,পিচ্ছি মিজান গং সহ তাদের দলীয় আরো ১৫/২০ জন। এরা সকলেই এমপি নদভীর পালিত সন্ত্রাসী। কিছুদিন আগে এই ইছামতি আলীনগর এলাকায় এই সন্ত্রাসীরা একটি সমাবেশ করেছিল। সেই সমাবেশে এমপি নদভী উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান সুমনের নাম উল্লেখ করে প্রকাশ্যে মাইকে হুমকি প্রদান করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় সংসদ সদস্য আবুরেজা নেজামুদ্দিন নদভী এইবারে নির্বাচনে পুনরায় প্রার্থী হবার পর থেকে উত্তেজনা ছড়াতে থাকেন। তিনি কিছু কিছু সমাবেশে তার বিরোধীদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে নিষেধ করেছেন। নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করে আমাদের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা,পোষ্টার লাগাতে বাঁধা দেয়া সহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নদভীর সমর্থকরা গতরাতে পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নে ইছামতি আলী নগরে ১নং ওয়ার্ডে এই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আক্রমণকারী সন্ত্রাসীরা নদভী সাহেবের নামে স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করেছে।
গতকালের সন্ত্রাসী ঘটনায় একটি ডাম্পার ট্রাক যেটি রাস্তার পার্শ্বে পার্ক করা ছিলো, চেয়ারম্যান সুমনের পরিবারের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস-যার নাম্বার চট্টমেট্রো-চ-১১-২১৮৬ এবং দুইটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ভাংচুর করা হয়। আমাদের প্রার্থীর ইউনিয়ন নির্বাচনী ক্যাম্প সম্পূর্ণ ভাংচুর ও অফিসে রক্ষিত মালামাল লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সন্ধ্যার পর থেকে চেয়ারম্যান সুমন সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বুঝতে পেরে ঢেমশা পুলিশ বিটের ইনচার্জকে ফোন করেন। তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাঁর উপস্থিতিতেই উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান সুমনের বাড়ীতে ১০০ রাউন্ডের অধিক গুলি বর্ষণ করেছে। তাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয়েছে। সুমনের একটাই দোষ সে আব্দুল মোতালেবের একনিষ্ঠ কর্মী।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতেই নদভী সাহেব এই হামলা করিয়েছেন। এই হামলা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করেছে। এই হামলার সম্পূর্ণ দায় আবু রেজা মোঃ নেজামুদ্দিন নদভীর। আমরা নদভী সাহেবকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি। চিহ্নিত সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার জন্য পায়তারা শুরু করেছেন নদভী। তাঁকে সুষ্টু নির্বাচনের স্বার্থেই থামানো খুবই দরকার। তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনের জরুরী আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি আরো বলেন, আমরা আচরণ বিধি ভঙ্গের যত অভিযোগ ইতোমধ্যে নদভীর বিরুদ্ধে করেছি তার সবগুলোর সুষ্টু নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ২১ তারিখ রাতে সংঘঠিত ঘটনার সাথে জড়িত সকল সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গকারী এমপি নদভীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়িত্বরত পুলিশের উদাসিনতার বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।
আমরা ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকাকে সন্দেহজনক বলে মনে করি। পুলিশের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু তারা কোন বিহিত করলো না। এতে জনমনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আশাকরি তা শীঘ্রই এজাহারে পরিণত হবে। এখানে আক্রান্ত ব্যক্তিরা উপস্থিত আছেন। তারা ন্যায় বিচার চাঁন। চেয়ারম্যান সুমনের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এ বিষয়ে রির্টানিং অফিসার বরাবরেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নির্বাচনে কোন অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও প্রতিহিংসা আমরা চাই না। আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব এর পক্ষ থেকে আইন শৃংখলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে সকল ধরণের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। ঈগল মার্কার জয়যাত্রা দেখে নদভী সাহেবের মাথা খারাপ হয়ে গেছে তিনি এখন বল প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন। পশ্চিম ঢেমশার ঘটনা তারই প্রমাণ। আগামী ৭ জানুয়ারী ২০২৪ নির্বাচনে ঈগল এর জয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের চুড়ান্ত হবাব দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। আমাদের নির্বাচনী যাত্রায় আমরা সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা চাই। আপনারা পাশে থাকবেন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জাতীয় স্বার্থে। আমাদের নেতাকর্মীদের বলছি আপনারা সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ধারণ করুন। কোন উসকানীর ফাঁদে পা দেবেন না। জয় আমাদের সুনিশ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব এর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আনজুমন আরা, এওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু ছালেহ, সাতকানিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ভুক্তভুগি রিদুয়ানুল হক সুমন, পৌর মহিলা কাউন্সিলর শাহানাজ পারভীন, মাছুমা বেগম, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শিকু আরা বেগম, পৌরসভা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল গফুর লালু, আওয়ামীলীগ নেতা আমির উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুমন, সাধারণ সম্পাদক নবাব মিয়া রকিব, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।