বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার আলফালাহ গলির নিজ বাসা থেকে লিয়াকতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার লিয়াকত আলী বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউপির পাইরাং কমলাবিবির পাড়ার জাকির আহম্মদের ছেলে।
পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে রহমান নগর আবাসিক এলাকার রোকেয়া করিমের ছেলের সংসারে অশান্তি চলছিল। দিন যত যাচ্ছিল অশান্তি ততই বাড়ছিল। এর মধ্যেই রোকেয়া করিম লোকমুখে মোহাম্মদ লিয়াকত আলীর নাম শোনেন। পরে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর রহমান নগরের বাসায় গিয়ে লিয়াকত আলীর সঙ্গে দেখা করেন রোকেয়া। তিনি দাম্পত্য কলহ মিটিয়ে দেয়ার জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। রোকেয়া এতে রাজি হন। চুক্তি অনুযায়ী ওই দিন ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমল করার জন্য শিখিয়ে দেন কিছু দেয়া-দরুদ। এভাবে কয়েকদিন পরপর টাকা নিয়ে রোকেয়া করিমকে বিভিন্ন দোয়া-দরুদ শিখিয়ে দেন লিয়াকত।
একপর্যায়ে রোকেয়ার বাসার পাশে দেবরের মালিকানাধীন খালি জায়গায় মাটির নিচে স্বর্ণের পাতিল রয়েছে বলে জানান লিয়াকত। যা তিনি কোরআনের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। আর এই স্বর্ণের পাতিল লিয়াকত পাইয়ে দিতে পারবেন। যার মূল্য হতে পারে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা। পেলে অর্ধেক তিনি নেবেন, অর্ধেক রোকেয়া করিমকে দেবেন। স্বর্ণের পাতিলের লোভে পড়ে যান এ নারী। স্বজনদের কাছে বিষয়টি গোপন করেন।
স্ট্যাম্পের মাধ্যমে দুইজনের মধ্যে ভাগাভাগির চুক্তি হয়। স্বর্ণের পাতিল পাইয়ে দেয়ার নামে কয়েক দফায় ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন লিয়াকত। ছয় মাস পার হলেও স্বর্ণের পাতিল না পাওয়ায় রোকেয়া টাকা ফেরত চাইলে আরো এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। নইলে তার ছেলের অমঙ্গল হবে বলে ভয়ভীতি দেখান লিয়াকত। একপর্যায়ে রোকেয়া বিষয়টি বুঝতে পেরে ১২ জুলাই থানায় অভিযোগ করেন।
ওসি আবুল কাশেম বলেন, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আলফালাহ গলির নিজ বাসা থেকে লিয়াকতকে গ্রেফতার করা হয়। টাকা না পেলেও দুইজনের মধ্যে হওয়া চুক্তির স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। টাকা নেয়ার কথাও স্বীকার করেছেন গ্রেফতার লিয়াকত। তবে টাকাগুলো দান করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
জানা গেছে, ৬৫ লাখ টাকা পাওয়ার পর এক নারীকে বিয়ে করেন লিয়াকত। তাকে ফ্ল্যাট কিনে দিতে ৪০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু টাকা পেয়ে ওই নারী তালাক দিয়ে চলে যান।