জাকির হোসেন
চীফ রিপোর্টার
চরম দারিদ্রতার মধ্যে কাটানো প্রথম জীবনের কথা স্মৃতিচারণ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার (১৬ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের পডকাস্ট হোস্ট লেক্স ফ্রিডম্যানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি জানিয়েছেন, তার ছোটবেলা কেটেছে খুবই দারিদ্রতার মধ্যে। তবে সেগুলো অনুভব করতে দেয়নি তার বাবা-মা। এমনকি স্কুলে যাওয়ার জন্য জুতা ছিল না বলেও জানিয়েছেন টানা তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা বিজেপির এই নেতা।
লেক্স ফ্রিডম্যানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, একটি ছোট বাড়িতে তারা থাকতেন। সেখানে তার বাবা-মা, ভাইবোন, চাচা, কাকা এবং দাদা-দাদি থাকতেন। কিন্তু সেই ঘরে কোনো জানালা পর্যন্ত ছিল না।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমার প্রথম জীবন চরম দারিদ্রতার মধ্যে কেটেছে, কিন্তু আমরা কখনই এই বোঝা অনুভব করিনি। এজন্য বাবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম ও তার মায়ের অবদানের কথা জানান মোদি।
স্কুলে যাওয়ার জন্য চাচার জুতা কিনে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি খালি পায়ে আমার স্কুলে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে দৌড়ে চাচার কাছে যাই। তিনি আমাকে দেখে অবাক হন। জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি এভাবে স্কুলে যাও?’। তো ওই সময় তিনি আমাকে এক জোড়া ক্যানভাস কিনে দেন এবং আমাকে পরান।
চাচার কাছ থেকে জুতা পাওয়ার পর সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে এমন চিন্তা মাথায় আসলে চিন্তিত হয়ে পড়েন বলে জানান মোদি। তাই সেগুলোকে ঝকঝকে রাখতে উপায় খুঁজতে থাকেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুল শেষে সন্ধ্যার দিকে, আমি স্কুলে আরও কিছুক্ষণ অবস্থান করতাম। আমি এক ক্লাসরুম থেকে আরেক ক্লাসরুমে যেতাম। ক্লাসে যেসব লেখার চক পড়ে থাকত সেগুলো সংগ্রত করতাম। সেগুলোকে পানিতে ভেজাতাম। এরপর পেস্টের সঙ্গে মিশাতাম। শেষে এগুলো আমার ক্যানভাস জুতার ওপর লেপে দিতাম। এতে জুতাগুলো আবারও উজ্জল সাদা হয়ে যেত।’
মোদি বলেন, আমার কাছে, সেই জুতাগুলো ছিল একটি মূল্যবান সম্পদ, বিরাট সম্পদের প্রতীক। আমি ঠিক জানি না কেন, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমাদের মা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। সম্ভবত এখান থেকেই আমরা এই অভ্যাসটি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি।
এদিকে গুজরাটে ২০০২ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন রাজ্যটির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেসময় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও সংঘাত না থামিয়ে বরং দাঙ্গা প্রতিরোধ যারা করতে চেয়েছিলেন তাদের শাস্তি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মোদিকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও ২৩ বছর ধরেই তাকে দায়ী করা হচ্ছে গুজরাট দাঙ্গার জন্য।
মোদি আরও বলেন, ২০০২ সালের সংঘাত নিয়ে এমন একটি ধারণা তৈরি করা হয়েছিল যেন সেটি গুজরাটের সবচেয়ে বড় দাঙ্গা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা, সাইকেলে ধাক্কার মতো ছোটখাটো ঘটনাতেও রাজ্যটিতে দাঙ্গার মতো ঘটনা ঘটতো।
তিনি বলেন, আমার বিধায়ক হওয়ার তিনদিন পর গোধরার ঘটনা ঘটে। মানুষকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আপনি কল্পনা করতে পারবেন পরিস্থিতি কতটা উত্তপ্ত ছিল। এটা সবচেয়ে বড় দাঙ্গা ছিল এমন গল্প ছড়ানো হয়েছিল যা মিথ্যা।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy