আবিদ হাসান,হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নকল, অনুমোদন ও মানহীন ভেজাল খাদ্যসামগ্রী। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও দোকানে নিয়মিত এসব খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এসব খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চিপস, চানাচুর, কটকটি, বিস্কুট, পাউরুটি, কেক ও আচারসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার। এছারাও বিভিন্ন প্রকার মশার কয়েলের মোড়কে মেয়াদ,কোম্পানীর সঠিক ঠিকানা নেই।
সরজমিনে উপজেলার গালা, বাল্লা, রামকৃষ্ণপুর, গোপীনাথপুর, কাঞ্চনপুর, চালা, বলড়া ও বয়ড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজার ও দোকান ঘুরে দেখা যায়, অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব অনুমোদন ও মানহীন বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। যার প্যাকেটে নেই কোন উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, মূল্য বা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাংস ও মাছের মসলা এবং বিস্কুটের প্যাকেটে বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন ও মানহীন চিপস। আবার প্রাণ, ইস্পাহানী, নভেলটি ও মেরিডিয়ানসহ বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের মোড়ক ও প্যাকেট নকল করে তাতে বিক্রি করা হচ্ছে মানহীন চিপস, বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। এসব খাবারের অধিকাংশই শিশুখাদ্য, ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শিশুস্বাস্থ্য।
যারা এসব খাদ্যসামগ্রী বাজারজাত করছেন তাদের বেশিরভাগেরই নেই বিএসটিআই এর অনুমোদন। শিশুদের এসব খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করতে কিছু পণ্যের প্যাকেটের মধ্যেই দেয়া হয় শিশুদের ছোট আকারের বিভিন্ন ধরণের খেলনাসামগ্রী, লজেন্স, হাতঘড়ি, নগদ টাকা। এছাড়া কিছু প্যাকেটে প্লাস্টিকের ব্যাট, ফুটবল, লাটিম, খেলনাগাড়ি, চড়কি, ভিউকার্ড, প্লাস্টিকের বাটি ও গামলাসহ শিশুদের বিভিন্ন খেলনার নাম সম্বলিত ছোট কাগজ ঢুকিয়ে দেয়া হয়। সেসব খাদ্যসামগ্রী কিনলে ভিতরে ঢুকানো কাগজে লেখা জিনিস বিনামূল্যে দেয়া হয়।
কয়েকজন দোকানদার জানান, যারা তাদের এসব খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন তাদের অধিকাংশের নাম, ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর তাদের কাছে নেই। যে সমস্ত খাদ্যসামগ্রী তারা রাখেন, এগুলো শেষ হয়ে গেলে তারা নিজেরাই এসে আবার দিয়ে যান।
এসব খাবার শিশুদের শরীরে কিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে জানতে চাইলে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হাফিজ জানান, এসব খাবার খেলে শিশুদের পাকস্থলীতে প্রদাহ, স্টোমাকের ক্ষতি, লিভার ও কিডনীর ক্ষতি হতে পারে।
উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো. নজরুল ইসলাম জানান, এসব খাদ্যসামগ্রী বাজারজাতকরণের জন্য বিএসটিআই এর অনুমোদন বাধ্যতামূলক। এছাড়াও, প্যাকেটের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদত্তীর্ণের তারিখ এবং মূল্য উল্লেখ থাকা আবশ্যক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এসব খাদ্যসামগ্রী বিক্রয় বন্ধে নিয়মিত আমাদের মোবাইল কোর্ট চলছে।