সোহেল রানা রাজশাহী তানোর থেকে
জন্মপ্রতিবন্ধী নাজিবুর পুরো নাম নাজিবুর রহমান। একুশ বছর বয়সী নাজিবুর জন্ম ২৯ নভেম্বর, ১৯৯৯। তার চিকন চিকন হাত-পা। উঠে দাঁড়ানো তো দূরের কথা ঠিক মতো বসতেও পারেন না। বিছানায় শুয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন একুশটি বছর। তাতে কী, নাজিবুরের রয়েছে প্রাণের গহীনে অদম্য শক্তি। আর সেই শক্তিকে পুঁজি করে সকল প্রতিবন্ধকতাকে দূরে ঠেলে দিয়ে তিনি একজন মোবাইল রির্চাজ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী। শুয়ে থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
নাজিবুর বলেন সে একটু একটু করে টাকা জমা করে ৭০০০ টাকা জমা করেছিলেন
আর সে তার আত্মীয়ের কাছে থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে
এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
শুধু নিজেকেই না, পুরো পরিবারকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই প্রতিবন্ধী নাজিবুৱেৱ জীবনে এল কালবৈশাখীর ঝড় তিনি আর দশটা প্রতিবন্ধীর মতন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে না গিয়ে নিজের চেষ্টায় মোবাইল ব্যাংকিং ও ফেক্সি লোডের ব্যবসা করতেন বিন্দু বিন্দু টাকা থেকে ৫৩ হাজার টাকা তার ব্যবসার পুঁজি হয়েছিল একদিন একটি মোবাইল হ্যাকার তার সরল মনে কিছু প্রশ্ন করে ৫১৭৯৮ টাকা নিয়ে নিয়েছে সেই থেকে নেমে এসেছে তার সংসারের দুর্দিন তাই প্রতিবন্ধী নাজিবুর সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আর্থিক সহায়তার জন্য স্থানীয় প্রতিনিধি ও মাননীয় এমপি মহোদয়ের কাছে সে এই সহায়তা চেয়েছেন যাতে করে তার জীবন চলার গতি ঠিক থাকে।
প্রতিবন্ধীকতার জন্য স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। কিন্তু তাতেও থেমে থাকেনি এই অদম্য প্রাণশক্তির যুবক নাজিবুরের চেষ্টা। নিজ চেষ্টায় বাড়িতে চাচাতো বোন ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছোট চাচীর কাছ থেকে পড়াশুনায় হাতেখড়ি নিয়েছেন তিনি। আর এই পড়াশুনা থেকেই এখন নাজিবুর শুয়ে শুয়ে মোবাইল রির্চাজ ব্যবসা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট চালান। বছর পাঁচেক হলো দারিদ্রতাকে জয় করতে তিনি রীতিমত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন মেধা ও মন দিয়ে। এরিমধ্যে একজন মোবাইল ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। নাজিবুর রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তানোর আব্দুল করিম সরকার ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী ও রামনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা কাওসার আলী, ইসমাইল হোসেন, কবিরসহ অনেকে জানান, আমাদের পড়াশুনার জন্য বাড়ি থেকে টাকা নাজিবুরের মাধ্যমেই পাঠানো হয়। নাজিবুর শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়েও যেভাবে ব্যবসা করে তা সত্যিই প্রসংশার দাবিদার। তাই সকলে এ ধরনের প্রতিবন্ধীকে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিই।