সাম্প্রতিক সময়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কলেজ ছাত্র মাসুমের রহস্যজনক মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা দাবী করে চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহত মাসুমের পিতা মো. ইউসুফ সওদাগর।
১০অক্টোবর(রবিবার) দীপ্ত দত্তসহ ৯জনকে আসামি করে দায়ের কৃত অভিযোগটি আদালত গ্রহন করে ইতিপূর্বে অনোয়ারা থানা কতৃক রুজু কৃত অপমৃত্যু মামালার নথি তলব করেছেন।
এ সংক্রান্ত এক আদেশে আগামী ১২অক্টোবরের মধ্যে লাশের সুরতহাল রিপোর্টসহ অন্যান্য সকল আলামত আদালতে পাঠনোর জন্য আনোয়ারা থানাকে বলা হয়েছে।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ গত ২অক্টোবর(শনিবার)রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদরের বাসা থেকে কোন এক ব্যানার টাঙানোর কথা বলে আনোয়ারা কলেজের দ্বাদশ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল্লাহ আল মাসুম(১৮)কে ডেকে নিয়ে যায় মাসুমের ঘনিষ্ট বন্ধু দীপ্ত দত্ত।
রাত ২টার দিকে মাসুমকে মৃত অবস্থায় উপজেলা সদররের অদুরে ইছামতি এলাকায় সাগর দত্তের বাসার নিকটবর্তী রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় আনোয়ারা থানা পুলিশ।
পরদিন(রবিবার)সকালে মাসুমের বাবা মো.ইউসুফ তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ এনে দীপ্ত দত্ত ও তার পিতা সাগর দত্তসহ ৫জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দিলেও থানা পুলিশ তা গ্রহন না করে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে।
এ বিষয়ে আনোয়ারা থানা পুলিশের বক্তব্য হচ্ছে তাদের প্রাথমিক ধারণা ব্যানার টাঙাতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মাসুমের মৃত্যু হয়েছে, তাই অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়, ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরে পরবর্তি ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। যদিও আলোচিত সেই ব্যানারটি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনোয়ারায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
হত্যা মামালা গ্রহণ ও আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঘটনার পরদিন রবিবার ও সোমবার থানা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘোরাও কর্মসূচি পালন করে নিহত মাসুমের স্বজন ও এলাকার শত-শত নারী পুরুষ।
নিহত মাসুমের বাবা আনোয়ারা সদর ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.ইউসুফ জানান তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। থানায় হত্যা মামলা করার শত চেষ্টা করেও ব্যার্থ হন। পুলিশের ভুমিকায় তিনি সন্দিহান, তাই ছেলে হত্যার সুষ্টু বিচার প্রার্থনা করে আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
এ দিকে ঘটনার পরথেকে আত্মগোপনে রয়েছে সদরের ব্যাবসায়ী ও সাবেক ইউপি সদস্য সাগর দত্ত ও তার ছেলে দীপ্ত দত্তসহ অভিযুক্ত সবাই।
নিহতের পরিবারের দাবী ও থানা পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে আনোয়ারায় সোশ্যাল মিডিয়াসহ সর্বত্র চলছে নানা গুঞ্জন।