রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল হককে (৩৫) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ বোধ করায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২য় তলার ১ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করে র্যাব। সেখানে র্যাবের প্রহরায় আসাদুলের চিকিৎসা চলছে। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আসাদুল শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় রংপুরের র্যাব-১৩ এর পক্ষ থেকে যে সংবাদ সম্মেলন করা হয় সেখানে গ্রেফতার অপর দুই আসামিকে হাজির করা হলেও আসাদুলকে আনা হয়নি। প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ হামলার ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন। শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরা হলেন- ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল হক (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস(২৮)। পরে আসাদুল হক, নবিরুল ইসলাম ও সান্টু চন্দ্র দাস র্যাবের কাছে ইউএনওর ওপর হামলার দায় স্বাকীর করেন। র্যাব জানায়, প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে তারা চুরির উদ্দেশ্যে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসায় যান বলে জানিয়েছেন। এদের মধ্যে নবিরুল ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথায় আঘাত করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে।