ইমাম হোসেন জীবন চট্টগ্রামঃ
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)।১২ রবিউল আউয়াল প্রিয় নবীর রস্মরণে অদ্বীতৃয় অনন্য ঐতিহাসিক চীরস্মরণীয় এই দিন। সকল মাসের মধ্যেও যেমন শ্রেষ্ঠ ও সারা বছরের সকলদিনের মধ্যেও শ্রেষ্ঠ ও উত্তম দিন হিসাবেও মর্যাদাপূর্ণ-হওয়ার কারণ-প্রিয় নবী এইদিনেই শুভ জন্মগ্রহণ করেন। আবার একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন মুসলিম উম্মাহর কাছে চীরস্মরণীয় এই দিন।
কারো নিকট এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবেও পরিচিত।বিশ্ব শ্রেষ্ঠমানব ইসলাম প্রিয় মুসলিম জাহানের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুল আমাদের প্রাত্যহিক ভূবনে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তো হোক পূর্ণ আমলে কর্রময় ও চীরস্মরণীয়।
এই উপলক্ষে বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে বের করা হয় ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস। মাদরাসার মাঠ পেরিয়ে মুরাদপুরের সড়কে আসার পরই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জুলুসটি। এটি নগরীর মুরাদপুর, জিইসি ও ওয়াসা মোড় হয়ে আবার জামিয়ার মাদরাসা মাঠে গিয়ে শেষ হয়। জুলুসে বিভিন্ন উপজেলা থেকে অগনিত মানুষজন অংশ নিয়েছেন।জুলুসে চট্টগ্রামে লাখো মানুষের ঢল নামে।এবারের জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের হজরত সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ।
পরে মাদরাসা মাঠে আলোচনা সভা, মিলাদ, কিয়াম ও মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় জশনে জুলুস।জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এবারের জুলুসে চট্টগ্রামের আশপাশের জেলা থেকে লোকজন আসতে নিরুৎসাহিত করেছিলেন আয়োজক কমিটি। জেলা সদরে স্থানীয়ভাবে তাদের জুলুস আয়োজনের জন্য বলা হয়েছিল। তবে এরপরও এসব এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন হাজারো মানুষ।
গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, ‘জুলুস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতির সকল কার্যক্রম গ্রহণ সফল ও সুন্দর পরিসরে করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আনজুমানের নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স ও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট’র উদ্যোগে ১২ই রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে ও ৯ই রবিউল আউয়াল ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক জশনে জুলুসে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফের সাজ্জাদানশীন আওলাদে রাসূল রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিক্বত হযরতুল আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা. জি. আ.) দুবাই থেকে বাংলাদেশ বিমানযোগে বন্দর নগরী চট্টগ্রামস্থ শাহ্ আমানত আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে শুভাগমন করেছেন এবং একই দিন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। হুজুর কেবলায়ে আলম আগামী ৯ রবিউল আউয়াল রবিবার ঢাকায় ঐতিহাসিক জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামে নেতৃত্ব দেন।
এদিকে হুজুর কেবলায়ে আলম এর উপস্থতিতে ১২ই রবিউল আউয়ালের জুলুসে ও জামিয়া ময়দানে উপস্থতি দেশ বরেণ্য পিএইচপি ফ্যামেলীর চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত আলহাজ্ব সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, আনজুমান ট্রাস্ট’র সিনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ¦ মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারী আলহাজ্ব মুহাম্মদ সামশুদ্দিন, এসিস্টেন্ট জেনারেল সেক্রেটারী আলহাজ্জ এস,এম, গিয়াস উদ্দিন শাকের, সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ কমরুদ্দিন সবুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ সহ লাখো জনতার ঢলে মহাসমুদ্রে উপস্থিত ছিলেন।
আজ ১৪৪৩ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল হচ্ছে ২০ অক্টোবর (বুধবার)। দিনটি যথাযথযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপন করা হবে। কেউ কেউ মাসব্যাপী প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, বেড়ে ওঠা, নবুয়ত, হিজরত, রাষ্ট্রগঠন, ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, আন্তর্জাতিক জীবন, সমাজ সংস্কারসহ জন্ম থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিষয় নিয়ে সীরাতুন্নবি ও উসওয়াতুন্নবী শিরোনামে অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন। এছাড়া কেউ কেউ মাজিউন্নবী আবার কেউ কেউ ৬৩দিন ব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী শীর্ষক আলোচনা সভাও অব্যাহ রাখে। যা রবিউল আউয়াল মাসেই উদযাপন করা হয়।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয় প্রাত্যহিক ভূবনে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তো হোক পূর্ণ আমলে কর্রময় ও চীরস্মরণীয়।প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ফিরে যাওয়ার মাস। প্রতি বছর এ মাসে মুসলিম উম্মাহ ক্ষণিকের জন্য হলেও ফিরে যায়। কারণ মাসটি যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। বিশ্বনবির শুভাগমন ও বিদায়ে উপলক্ষ্যে বিশ্বমানবতার শুধু আনন্দ-উৎসবের মাস নয় ।
রবিউল আউয়াল মাস। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ফিরে যাওয়ার মাস। প্রতি বছর এ মাসে মুসলিম উম্মাহ ক্ষণিকের জন্য হলেও ফিরে যায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয়। কারণ মাসটি যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। বিশ্বনবির শুভাগমন উপলক্ষ্যে বিশ্বমানবতার আনন্দ-উৎসবের মাস।
প্রায় দেড় হাজার বছর আগে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র নগরী মক্কার বিখ্যাত বনু হাশিম বংশে রবিউল আউয়াল মাসের দ্বিতীয় সোমবার (ফীলের বছর) দিনের রাতের মহাসন্ধিক্ষণ ‘সুবহে সাদেক’-এ শুভ জন্মগ্রহণ করেন। আবার একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করলেও মুসলিম উম্মাহর কাছে এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পরিচিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভ জন্মের দিন ও বছর নিয়ে হাদিসে পাকে আছে সুস্পষ্ট বক্তব্য। তিনি ইংরেজি পঞ্জিকার হিসেব মতে, ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ২০ অথবা ২২ এপ্রিল জন্ম গ্রহণ করেন।
বার ও জন্ম বৎসর নিয়ে হাদিসে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকলেও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুনির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য।