কাইয়ুম মাহমুদ চলনবিল
চলনবিলের উল্লাপাড়ায় আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রানে প্রকৃতি মুখরিত। মধুমাসের আগমনী বার্তার পূর্বাভাস দিচ্ছে আমের মুকুল। গাছে গাছে আসছে আমের মুকুল, ফুটছে ফুল আর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। সেই ঘ্রাণ বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ ঘ্রান। যে ঘ্রান মানুষের মনকে বিমোহিত করে। এ যেন আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রানে মুখরিত উল্লাপাড়া । জাতীয় সঙ্গীতে- ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে–, ও মা অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে কি দেখেছি মধু হাসি।পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিতে – ‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ…।’ কথাগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে প্রচুর আম বাগান। এছাড়াও ইদানিং ছাদ বাগানে সৌখিন চাষীরা বিভিন্ন প্রজাতির উচ্চফলনশীল আমের চাষ করে থাকেন। ছাদ বাগানের মালিক অনেকেই জানান, তাদের ছাদ বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছে। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার কথা বলেন তারা। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা। প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে ছাদে আম চাষ করা গেলে পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। কৃষি অফিসার সুবর্ণা ইয়াসিন সুমি বলেন, গাছে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। এছাড়া আম গাছ সবসময় “অলটারনেট বিয়ারিং হেবিট” বা “এবছর ফলন বেশি হলে পরের বছর ফলন কম হবে” পদ্ধতিতে ফল দেয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছি। তিনি বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলায় এবছর প্রতিবছরের তুলনায় এবছর আরও বেশি উতপদন বেশি আশা করছি উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা, দবিরগঞ্জ,শ্রী খোলা সহ বিভিন্ন এলাকায় সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয়। আর এসব জায়গায় আম্রপালী জাতের আমের চাষই সবচেয়ে বেশি হয়। এছাড়া বারি-৪, ল্যাংড়া জাতের আমের চাষও হয় উল্লাপাড়ায় । তিনি আরও বলেন, এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..