কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর পানির প্রবল স্রোতে অব্যাহত তীব্র ভাঙ্গনের ফলে অর্ধশত ঘর-বাড়ি ও কয়েক একর ফসলী জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, ৬টি ক্রসবাঁধ, ২টি বেরিবাঁধ, বেশ কয়েকটি হাট-বাজার ও কয়েক একর ফসলী জমি।
চলতি বর্ষা মৌসুমে তিনদফা বন্যা ও তিস্তার প্রবল ভাঙ্গনে অর্ধশত ঘর-বাড়িসহ ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভাঙ্গন কবলিত ভূক্তভোগী পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়নে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করেছেন নদী পাড়ের মানুষজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে গাবুর হেলান, ডাংরারহাট, চতুরা, কালিরহাট ও বুড়িরহাট এলাকার মানুষজন ঘরবাড়ি সরিয়ে পার্শ্ববর্তী বাঁধের রাস্তায় কিংবা উঁচুস্থানে আশ্রয় নিচ্ছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার গাবুর হেলান গ্রামের আইজার আলী (৫৬) আঃ মান্নান (৬০), আবুল হোসেন (৬৫), সফিকুল ইসলাম (৬০), নজির হোসেন (৭৫), বুড়িরহাট এলাকার মজিদুল (৬৫), মতিন (৫৫), ছালাম (৪৫), সফিকুল (২৫) তৈয়ব আলী (৭০), সুকুমার (২৫), চাঁদ মিয়া (৬৫), আইজার (৫৫), মোফাজ্জল (৪৫) ও সিরাজুল (৫০) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাদের এক সময় গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ, গোলা ভরা ধান ও সবই ছিল। কিন্তু নদী ভাঙ্গার পরে আমরা সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে অন্যের জায়গায় কোনরকম মানবেতর জীবন যাপন করছি।
তারা আরও বলেন, সরকারিভাবে যে সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি তাতে আমাদের কিছুই হয়না। একাব্বার আলী (৭৫) বলেন, আমরা সাহায্য চাইনা, নদী শাসনের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা চাই।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দ্দী বাপ্পি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম, তিস্তা নদীরক্ষা জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আলতাফ হোসেন সরকার, বিদ্যানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তাইজুল ইসলাম ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ তাইজুল ইসলাম বলেন, জরুরী ভিত্তিতে নদী খনন হলে ভাঙ্গন কমে যাবে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং অব্যাহত রয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..