কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ অর্থ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযােগ তুলে রৌমারী উপজেলার সদর রৌমারী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালুর প্রতি অনাস্থা জানিয়ছেন ১০ইউপি সদস্য। বুধবার এ বিষয় প্রতিকার চেয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অনাস্থা আনার কারণ পেশ করেছেন। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে ইউনিয়ন কােন মাসিক সভা না হওয়ায় পরিষদে চলছে অচলাবস্থা। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরােধে উনয়ন্ন বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।
চেয়ারম্যানের অপকর্মের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযােগ দেবার পরেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশাসনের প্রতি ক্ষােভ প্রকাশ করেন ভুক্তভােগি ইউপি সদস্যগণ।
ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযােগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অর্থআত্মসাৎ,স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন খাত থেকে পাওয়া ৩৪ লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকার মধ্যে ২০লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে দুটি দােকান ঘর বরাদ্দের ৩লাখ ও পুরাতন ভবনের তিনটি দােকানের জামানত ও ভাড়া বাবদ তিন লাখ টাকাসহ মােট ২৬লাখ ৩৬হাজার ৩৬৪টাকা আত্মসাৎ করেন। নিয়ম-নীতির কােন তোয়াক্কা না করেই জন্ম সনদ ও ট্রেড লাইন্সের টাকা নয়ছয়, এলজিএসপি ও নন-ওয়েজ, বয়স্ক- বিধবা,প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফসহ বিভিন্ন সুবিধাভােগিদের নামের তালিকা প্রণয়ন সমন্বয় ছাড়াই চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। সকল ইউপি সদস্যরা অভিযােগ করেন, বিভিন্ন প্রলােভন, ভয়ভীতি ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ৩০০টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চেয়ারম্যান স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে জানানো হয়।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান লাল মিয়া অভিযােগ করে বলেন, এর আগে ২০১৯ সালর ২৬ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক),ঢাকা বরাবর ওই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেও কনো ফল পায়নি ভুক্তভােগি সদস্যরা। এ ছাড়াও ২০১৯ সালর ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযােগ দিলে গঠিত হয় একটি তদন্ত কমিটি। ওই কমিটি কর্তৃক ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবার কথা থাকলেও আজও তা আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযােগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, এলজিএসপি, কাবিখা,কাবিটার কাজ না করেই ওই ইউপি সদস্যরা আমার কাছ বিল চায় সেটা দিতে অস্বীকার করায় তাদের কাছে আমি ভালাে না। সদস্যদর বিরুদ্ধেও অভিযােগ রয়েছে। তারা আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়েছে তাতে রাজী না হওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন। ইউপি সদস্যদের কাছে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেবার কথা অস্বীকার করেন তিনি। রৌমারী উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালুর প্রতি অনাস্থার একটি অনুলিপি পাওয়া গেছে।এরআগে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উঠা অভিযােগের তদন্ত চলমান রয়েছে।তিনি আরো বলেন,আগামী ৩দিনর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান।