দিলদার চলে গেলেও তার জনপ্রিয়তা কমেনি একটুও। মৃত্যুর সময় দিলদার রেখে গেছেন স্ত্রীর রোকেয়া বেগম ও দুই কন্যা মাসুমা আক্তার ও জিনিয়া আফরোজকে। সেই পরিবার এখন কেমন আছে?
জানা গেছে, দিলদার যখন মারা যান তখন তার বড় মেয়ের বয়স ২৫ বছর। এখন তিনি বাচ্চার মা। পেশায় চিকিৎসক। তার ছেলে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়য়ে পড়েন। আর মেয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে।
ছোট মেয়ে জিনিয়ার একছেলে ও এক মেয়ে। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি চাকরি করে সংসার চালাতেন। জিনিয়া আগে টেলিকমিউনিকেশনে চাকরি করতেন। সেখানে থেকে চলে আসেন ব্র্যাক ব্যাংকে। পাঁচ বছর চাকরির পর সেটিও ছেড়ে দেন। শারীরিক অসুস্থতা ও অতিরিক্ত কাজের চাপে চাকরিটি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
এই করোনা আতঙ্কের দিনে নয়, অনেক দিন ধরেই ঢালিউডের কেউ দিলদারের পরিবারের খোঁজ নিচ্ছেন না বলে জানান তার মেয়েরা। তার দুই মেয়ে জানান, তাদের বাবা দিল দরিয়া মানুষ ছিলেন। চলচ্চিত্রের মানুষের বিপদ আপদে পাশে দাঁড়াতেন। তাই চলচ্চিত্র থেকে প্রাপ্ত অর্থ চলচ্চিত্রাঙ্গনেই বেশি ব্যয় হয়েছে।
তারা দুই মেয়ে আরো জানান, বাবা জীবিত থাকতে তাদের মা একটা বুদ্ধির কাজ করেছিলেন; যার ফল তারা এখন ভোগ করছেন। তার বাবার আয়ের টাকা জমিয়ে ডেমরায় একটি পাঁচতলা বাড়ি করেছেন। ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯৪ সালে। এখন চারতলা পর্যন্ত ভাড়া দেয়া এবং পাঁচ তলায় তার মা মাঝেমধ্যে থাকেন।
পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন দিলদার। অথচ এখন তার খোঁজ খবর রাখছেন না ঢাকাই চলচ্চিত্রের লোকজন। জন্ম-মৃত্যু দিবস কোন প্রকার স্মরণ ছাড়াই চলে যায়।
দিলদারের মেয়ে জিনিয়া বলেন, আব্বা মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরও অনেকে খোঁজ খবর রাখতেন। কিন্তু এখন মিডিয়ার কারো সঙ্গে যোগাযোগ নেই আমাদের। কৌতুক অভিনেতা আনিস আঙ্কেল বাবার কাছের বন্ধু ছিলেন। আমাদের সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তিনি খোঁজ রাখতেন। এছাড়া প্রয়াত প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্নাও খোঁজ খবর রাখতেন।
১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ সিনেমার মাধ্যমে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন দিলদার। এরপর বেদের মেয়ে জোসনা, বিক্ষোভ, অন্তরে অন্তরে, কন্যাদান, চাওয়া থেকে পাওয়া, স্বপ্নের নায়ক, আনন্দ অশ্রু, শান্ত কেন মাস্তান, গাড়িয়াল ভাই, বাশিওয়ালা সিনেমার অভিনয় করে হয়ে ওঠেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী কৌতুক অভিনেতা।
দিলদারের জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে, সেই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে তাকে ‘নায়ক’ হিসাবেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। তাকে নায়ক করে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘আব্দুল্লাহ’ নামে একটি সিনেমা। শুধু তাই নয়, এমন অসংখ্য সিনেমা ছিল, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার দিলদারের কথা ভেবেই গল্প লিখতেন।