ওয়াকিল আহমেদ,ক্ষেতলাল(জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ-
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পতিত জমিতে প্রতি বছরের মতো এবারও মৌসুমী সবজি সাজনা ডাটার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সাজনা ডাটার উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, সাজনা ডাটায় ১৭-১৮টি ভিটামিনের উপাদান রয়েছে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ভিটামি-এ ও সি উপাদান সবচেয়ে বেশি রয়েছে। সাজনা ডাটা খেতেও সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
সাজনা ডাটা স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। দৈনিক সূর্যোদয় চাষীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, মৌসুমের প্রথম দিকে বাজারে সাজনা ডাটা প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে বাজারে ব্যাপক আমদানি হওয়ায় বাজারে অনেক দাম কমে গেছে। এখন গ্রামে গ্রামে ফেরিওয়ালারা গিয়ে প্রতি কেজি ১৫-২৫ টাকা দরে ক্রয় করছে। যা বর্তমান বাজারের তুলনায় কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা কম।
ক্ষেতলাল বাজারের কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানায়, প্রতিদিন এ বাজারের প্রায় ১ হাজার থেকে দেড় হাজার মন পর্যন্ত সাজনা ডাটা ক্রয় করা হয়। যেগুলো রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়।
ক্ষেতলাল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, সাজনা ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির। এর মধ্যে এক প্রজাতির সাজনা ডাটা বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়, যাকে বলা হয় বারমাসী বা রাইখঞ্জন সাজনা নামে পরিচিত।
অপরটি মৌসুমী হিসাবে পাওয়া যায়। তারা আরো জানায়,এ উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে সাজনা ডাটা চাষ না হলেও কৃষি বিভাগের আইপিএম, আইসিএম ও এনসিডিটি প্রকল্পের কৃষক মাঠ স্কুলের কৃষক কৃষানীদের মাঝে পতিত জমির আইল, পুকুর পাড়ের আইল, বাঁধের ধারে বাড়ির আশেপাশে এমনকি শহর বন্দরের যেকোনো ফাঁকা জায়গায় লাগানোর জন্য উদ্বৃদ্ধ করেন। এর কোনো বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না।
গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুতে রাখলেই গাছ জম্মায় এবং পরের মৌসুমেই সাজনা ডাটা ধরে। এমনকি এ গাছের কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠে এ গাছ। বড়-মাঝারি ধরনের একটি গাছ থেকে ৭-৮ মণ পর্যন্ত সাজনা ডাটা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহিদুর রহমান জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, কৃষি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২/৩ বছর আগে কৃষক-কৃষাণীর মাঝে সাজনা ডাটা চাষে উব্দৃদ্ধ করা হয়। ফলে এই কয়েক বছরে উপজেলায় ব্যাপক ভাবে সাজনা ডাটা উৎপাদন হওয়ায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছে চাষীরা।
কোন প্রকার ঔষুধ ও পরিচর্যা ছাড়াই প্রাকৃতিক ভাবে সাজনা ডাটা চাষ হওয়াই। সাজনা ডাটার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বহু পুষ্টি গুনসহ খেতেও সুস্বাদু বলেও তিনি জানান।